প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর শান্ত হল আগুনের তাণ্ডব। আগুনের গ্রাসে আশপাশের বাড়ি, স্কুল, আবাসনগুলি ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা একটা ছিলই। কিন্তু দমকল বাহিনীর ও বায়ুসেনার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় অঘটন ঘটলনা। এ যাত্রায় বেঁচে গেল দিল্লির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা মালব্যনগর। গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টের সময় মালব্যনগরের একটি রাবার ও প্লাস্টিকের গুদাম দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। ১টি রাবারভর্তি ট্রাক থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে গুদামে। গোটা এলাকা ভরে ওঠে কালো ধোঁয়ায়। আগুন ছড়ানোর আশঙ্কায় ভয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় স্থানীয়দের মধ্যে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে একএক করে ছুটে যায় দমকলের ৩৫টি ইঞ্জিন। ঘিঞ্জি এলাকার সরু রাস্তা দিয়ে দমকলের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছতে বেশ কিছুটা সময় নিয়ে নেয়। ততক্ষণে আগুন বিধ্বংসী চেহারা নিয়ে আশপাশের কয়েকটি গাড়ি, দোকানে ছড়িয়ে পড়েছে।
আগুন লাগার পরেই আশেপাশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। খালি করে দেওয়া হয় গোটা এলাকা। বন্ধ করে দেওয়া হয় গুদামের আশেপাশের রাস্তা। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে তীব্র ধোঁয়ায় অচেতন হয়ে পড়েন দিল্লির দমকল বিভাগের প্রধান। চলতি বছরে এমন বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দিল্লিতে এই প্রথম। কারখানার পিছনেই একটি বেসরকারি স্কুল রয়েছে। স্কুলের একটি অংশ আগুনে পুড়ে ভেঙে পড়ে। এখন গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলছে স্কুলটিতে। স্কুল চলাকালীন আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে ভয়ংকর কিছুও ঘটতে পারত বলে মনে করছেন দমকলকর্মীরা।
রাতভর গ্যালন গ্যালন জল, ফোম দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন দমকল কর্মীরা। কিন্তু তাতেও আগুনের দৌরাত্ম্য না কমায় স্থানীয় প্রশাসন দ্বারস্থ হয় বায়ুসেনার। বুধবার সকালে আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় বায়ুসেনার এমআই ১৭ কপ্টার। আকাশপথে জল ঢেলে চলতে থাকে আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা। সকাল ১০টা নাগাদ ধীরে ধীরে আগুনের লেলিহান শিখা স্তিমিত হতে শুরু করে। আগুনে পুড়ে যাওয়া বিস্তীর্ণ এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে চলে কুলিং প্রক্রিয়া। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যান আম আদমি পার্টির নেতা সোমনাথ ভারতী। কারখানাটি বেআইনিভাবে চলছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।