রাতের অন্ধকারে ছোবল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই নানা উপসর্গ। সকাল হওয়ার আগেই সব শেষ। ঠিক এমন ভাবেই মালভূমি এলাকার গ্রামেগঞ্জে বাড়ছে সাপে কাটায় মৃত্যুর সংখ্যাটা। কিন্তু এই ‘দুর্ধর্ষ দুশমন’ কমন ক্রেট বা ডোমনা চিতিকে এবার ভয় পাচ্ছেন সর্প বিশারদরাও। তার সবথেকে বড় কারণ কালাচ বা ডোমনা চিতির রহস্যময় নিউরোটক্সিন।
সর্প বিশারদ দীনবন্ধু বিশ্বাসের কথায়, এই বিষের অর্থাৎ নিউরোটক্সিনের তীব্রতা এত বেশি যে কামড়ানোর সাথে সাথে শরীরের কামড় খাওয়া অংশ অবশ হয়ে যায়। ফোলা, জ্বালা বা যন্ত্রণা হয় না। এমনকি দাঁতের চিহ্নও থাকে না। মাটির দেওয়াল বেয়ে ডোমনা চিনি খুব সহজে ওঠানামা করতে পারে। মানুষের বিছানার গরমে থাকতে ভালবাসে। ঠিক সেই কারণেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘুমের মধ্যে এদের শিকার হন মানুষজন। প্রায় ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পরে পেটে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, বমি শুরু হয়। ততক্ষণে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে শরীরে।
ঠিক এভাবেই গত মঙ্গলবার রাতে ঝাড়খণ্ডের জামতারা জেলার কুণ্ডহিতে একটি ছাত্রাবাসে মৃত্যু হয় অর্পিত গড়াই ও কিরণ হাঁসদা নামে দুই বালকের। রাতের অন্ধকারে ডোমনা চিতি কামড়ানোর অনেকক্ষণ পর্যন্ত তারা বুঝতেই পারেনি যে সেটা সাপের কামড়। তারপর শুরু হয় তীব্র পেট ব্যথা। সাপটিকে ঘরের মধ্যে আবিষ্কার করার পর বোঝা যায় আরও ২ পড়ুয়াও সাপের ছোবলে আক্রান্ত। ৪ জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও মৃত্যু হয় ২ পড়ুয়ার।
উপমহাদেশের স্থলভাগের সবথেকে বিষধর সাপ ডোমনা চিতির আক্রমণ থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচানোর জন্য সর্প বিশারদরা প্রচার চালাচ্ছেন বিভিন্ন মাধ্যমের সাহায্যে।