ফেসবুকে গোটা ঘটনাটা বিস্তারিতভাবে জানিয়ে পোস্ট করেছিলেন বিখ্যাত মালয়ালম ডাবিং শিল্পী ভাগ্যলক্ষ্মী। গণধর্ষণের শিকার এক বছর ৩৫-এর মহিলা নিজের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা খুলে বলার পর ভাগ্যলক্ষ্মীর মনে হয়েছিল একথা সকলের সামনে আনা জরুরি। ফলে ফেসবুকে পোস্ট। যা কেরালা জুড়ে শোরগোল ফেলে দেয়। ভাগ্যলক্ষ্মীই ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীকে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে নিয়ে আসেন। তবে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই মুখ ছিল তোয়ালে দিয়ে ঢাকা। নির্যাতিতা মহিলার দাবি, এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও তাঁর ৩ ভাই মিলে তাঁকে ধর্ষণ করে। তারপর শুরু হয় গোটা বিষয়টা মিটিয়ে ফেলার জন্য চাপ। যাতে পুলিশের একাংশও জড়িত ছিল বলে অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা।
তাঁর দাবি, ২০১৪ সালে তাঁর স্বামীর বন্ধু ওই রাজনীতিবিদ ও তাঁর ৩ ভাই তাঁকে এসে জানান, তাঁর স্বামী নেশা ছাড়ানোর জন্য যে হাসপাতালে গিয়েছিলেন সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। স্বামীর অসুস্থতার কথা শুনে স্বামীর বন্ধু ওই নেতার সঙ্গে গাড়িতে চড়ে বসেন তিনি। যেতে যেতে আচমকাই মূল রাস্তা ছেড়ে গাড়িটি অন্য পথে বাঁক নেয়। বারবার অন্য পথে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলেও ওই মহিলার প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি ৪ জন। নির্জন এক জায়গায় একটি বাড়ির সামনে গিয়ে গাড়ি থামে। সেই বাড়িতেই তাঁকে পাশবিকভাবে ধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। পরে ভয় দেখায় গোটা ধর্ষণের ঘটনা মোবাইলে তোলা আছে। কাউকে বিষয়টা জানালে সেই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবে তারা। প্রায় ৩ মাস পর তাঁর ব্যবহারে টানা অসঙ্গতি চোখে পড়ায় তাঁর স্বামী কী হয়েছে তা বলার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এরপর তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা স্বামীকে খুলে বলেন নির্যাতিতা। দুজনে ঠিক করেন পুলিশে অভিযোগ জানাবেন। সেইমত পুলিশের কাছে গেলেও ওই মহিলার দাবি, তাঁকে ক্রমাগত বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে। তদন্তের নামে ঘটনা সম্বন্ধে এমন এমন প্রশ্ন করা হয় যা মানসিক ধর্ষণের সামিল। অন্যদিকে অভিযুক্তরা তাঁর স্বামী ও সন্তানদের মেরে ফেলারও হুমকি দিতে থাকে। এসবের মুখে বাধ্য হয়ে তাঁকে অভিযোগ তুলে নিতে হয়। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে গোটা ঘটনার কথা জানাতে গিয়ে ভেঙে পড়েন ওই মহিলা। তিনি জানান, এখনও প্রতি মুহুর্তে তাঁর পরিবারের জীবন সংশয় রয়েছে। গোটা ঘটনায় কেরালা জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ভাগ্যলক্ষ্মীর দাবি, পুলিশ এমন এক ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের পরিবর্তে একজন নির্যাতিতাকে জিজ্ঞেস করেছিল ধর্ষণের সময় তাঁর কাকে বেশি পছন্দ হয়েছিল। তাঁর প্রশ্ন এটাই কী পুলিশের কাজ?