এক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ৮৩ বছরের এক বৃদ্ধের। খবরটা এমন হতেই পারত। এমন পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই বৃদ্ধের মৃত্যু গোটা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে হৈহৈ ফেলে দিয়েছে। কারণ যিনি এই পথ দুর্ঘটনায় মারা গেলেন তাঁর নাম ফৈজুল হাসান কাদরি। যিনি তাঁর স্ত্রী তাজা মুল্লি বিবি-র মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতিতে একটি মিনি তাজমহল গড়া শুরু করেছিলেন। তাও নিজের উপার্জিত পুঁজিতে।
স্ত্রীয়ের মৃত্যুর পরই ঠিক করেছিলেন তাঁর কবরের ওপর একটি তাজমহল তৈরি করবেন। ঠিক যেমনটা করেছিলেন মোঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী মমতাজ বেগমের স্মৃতিতে। তেমনই এক মিনি তাজমহল গড়ার কাজ শুরু করেন ফৈজুল হাসান কাদরি। নিজের একখণ্ড জমিতে সেই মিনি তাজ একটা রূপ নেয়ার পর দরকার ছিল প্রচুর শ্বেত পাথরের। কিন্তু সেই অর্থ ছিলনা এই প্রাক্তন পোস্টমাস্টারের। ফলে ফের টাকা জমানো শুরু করেন তিনি।
এদিকে মিনি তাজমহল তৈরির কাজ বন্ধ হওয়ার খবর পেয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব ফৈজুলকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করার জন্য যাবতীয় খরচ বহন করতে চান। কিন্তু স্ত্রীকে ভালবেসে তাঁর স্মৃতিতে তৈরি তাজমহল তাঁর নিজের রোজগারের টাকায় শেষ করতে চাইছিলেন ফৈজুল। কারও কাছ থেকে টাকা নিয়ে নয়। ফলে অখিলেশের সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। বরং অখিলেশকে তাঁর গ্রামে মেয়েদের একটি কলেজ গড়ে দিতে বলেন।
সেই অশীতিপর বৃদ্ধ ফৈজুল ২ লক্ষ টাকা জমিয়েও ফেলেছিলেন। কদিনের মধ্যেই জয়পুর থেকে ওই টাকা দিয়ে পাথর কেনার কথা। কিন্তু তার আগেই পথ দুর্ঘটনা কেড়ে নিল তাঁর জীবন। স্ত্রীকে ভালবেসে তাঁর তাজমহল গড়ার স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেল। তবে তাঁর আত্মীয়রা ঠিক করেছেন ফৈজুল হাসান কাদরিকে তাঁর স্ত্রীয়ের কবরের পাশেই কবর দেবেন। আর তার ওপর তাঁর অসম্পূর্ণ তাজমহলকে পূর্ণ করবেন। ঠিক শাহজাহানের মত। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা