নোট বাতিল পরবর্তী সময়ে কেন্দ্র বলেছিল কালো টাকার ওপর এবার দিতে হবে ২০০ শতাংশ কর। আতঙ্ক ছড়িয়েছিল কালো টাকার কারবারিদের মনে। কিন্তু মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে এবার কালো টাকার কারবারিদের টাকা সাদা করার দুরন্ত অফার দিল কেন্দ্র। তাও আবার আয়কর আইনে সংশোধন চেয়ে দস্তুরমত সংসদে বিল পেশ করে এই অফার দেওয়ার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কী এই অফার? ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া নগদ অর্থের মধ্যে হিসাব বহির্ভূত অর্থ থাকতেই পারে। সেই অর্থের কথা যদি অ্যাকাউন্টের মালিক নিজে থেকে আয়কর বিভাগকে জানান তবে তাঁকে হিসাব বহির্ভূত অর্থের ওপর কর ও জরিমানা মিলিয়ে ৫০ শতাংশ কর দিতে হবে। এটাই অনেকটা কমে যাবে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনার আওতায় এলে। সেক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টের মালিককে ৩০ শতাংশ টাকা দিতে হবে। বাকি ৭০ শতাংশ তাঁর কাছেই থেকে যাবে। তবে মোট হিসাব বহির্ভুত টাকার ৫০ শতাংশ ২টি যোজনায় জমা পড়বে, আর তা ৪ বছর তিনি তুলতে পারবেন না। একটি প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনা ও অপর যোজনাটি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঠিক করবে। তবে ওই টাকার ওপর কোনও সুদও পাওয়া না। এতো গেল হিসাব বহির্ভূত অর্থের কথা নিজে থেকে জানালে। আর যদি আয়কর দফতর হানা দিয়ে হিসাব বহির্ভূত অর্থ পায় তবে অর্থের মালিককে দিতে হবে কর ও জরিমানা মিলিয়ে ৮৫ শতাংশ টাকা। যারমধ্যে ৭০ শতাংশ কর ও ১৫ শতাংশ জরিমানা। এক্ষেত্রেও অফার আছে। আয়কর হানায় ধরা পরার পরও যদি কেউ প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনার আওতায় টাকা জমা রাখতে ইচ্ছুক হন তবে এক ধাক্কায় ৮৫ শতাংশ অর্থ কমে চলে আসবে ৫০ শতাংশে। তবে শর্ত সেই এক। ওই টাকা ৪ বছরে তোলা যাবে না। আর সুদও পাওয়া যাবে না। এদিকে মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে এক ধাক্কায় ২০০ শতাংশ কর থেকে নেমে ৫০ শতাংশ থেকে ৮৫ শতাংশে কেন্দ্রের ওই সহানুভূতি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। কালো টাকার কারবারিদের প্রতি কেন্দ্রের এমন নরম মনোভাব কেন তা জানতে চেয়েছেন তাঁরা। এমনকি বিরোধীদের একাংশের দাবি, দেশের মানুষ টাকার কষ্ট সহ্য করেও কেন্দ্রের তুঘলকি মনোভাব মেনে নিচ্ছিলেন একটা কথা মাথায় রেখে যে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে কালো টাকার কারবারিরা জব্দ হবেন। কিন্তু যেভাবে কেন্দ্র কালো টাকার কারবারিদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে শুরু করেছে তাতে আমজনতার কষ্ট মাঠে মারা যাবে না তো? সে প্রশ্নও তুলতে শুরু করেছেন তাঁরা।