স্বামীর সঙ্গে তার স্কুল জীবনের বান্ধবীর একটা যোগাযোগ আছে একথা তিনি জানতেন। পরে বুঝতে পারেন তাদের মধ্যে যোগাযোগটা কেবলই বন্ধুত্বের নয়। ২ জনের মধ্যে একটা প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তারা নিয়মিত একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে। হয়ত তা নিয়ে সংসারে কিছুটা অশান্তিও হয়। কিন্তু স্বামী ও তার প্রেমিকার ঘনিষ্ঠতার কথা জানতে পারাটা যে তাঁর জীবনটাই শেষ করে দেবে তা বোধহয় আন্দাজ করতে পারেননি বছর ২৬-এর পূজা রাই।
পুলিশ জানাচ্ছে, বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত পূজা স্বামী রাহুল কুমার মিশ্রর সঙ্গে দিল্লির কিষণগড় এলাকায় থাকতেন। ৩২ বছরের রাহুলের সঙ্গে তার স্কুল জীবনের বান্ধবী বছর ৩৩-এর পদ্মা তিওয়ারির ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা জানতে পারেন পূজা। এরপরই রাহুল ও পদ্মা মিলে স্থির করে পূজাকে এই দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দেবে তারা। পুলিশের কাছে সে কথা কবুল করেছে দুজন। জেরার মুখে দুজনে স্বীকারও করেছে কীভাবে তারা পূজা রাইকে হত্যা করে।
পুলিশ জানাচ্ছে, গত ১৬ মার্চ পূজার সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়িতে আসে পদ্মা তিওয়ারি। বাড়িতে ঢুকে জল চায় পূজার কাছে। বাড়িতে কেউ এসে জল চাইছে। তাই দ্রুত জল আনতে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করেন পূজা। সেই সুযোগে সঙ্গে করে আনা ২টি পানীয়ের প্যাকেটের একটিতে মাদক জাতীয় বস্তু মিশিয়ে দেয় পদ্মা। তারপর সেই প্যাকেটটি পূজাকে খেতে দেয়। পূজা ওই পানীয় খাওয়ার পর থেকেই অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। বমি শুরু হয়। এই অবস্থায় কিছু একটা আন্দাজ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
পূজা বাড়ি থেকে বার হওয়ার চেষ্টা করতেই তাঁকে ধরে নেয় পদ্মা। তারপর তাঁকে মেঝেতে ফেলে তাঁর মাথা বারবার মেঝেতে ঠুকে দিতে থাকে। এতে মৃত্যু হয় পূজার। মৃত্যুর পর এই হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যার রূপ দিতে একটি সুইসাইড নোট ফেলে যায় রাহুল ও পদ্মা। তদন্তে নেমে পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় রাহুল ও পদ্মাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। বারবার জেরার মুখে এক সময়ে ভেঙে পড়ে তারা। সব ঘটনা স্বীকার করে নেয়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা