জম্মু কাশ্মীরের কাঠুয়ার একটি ঘটনায় গত বছর জানুয়ারিতে গোটা দেশ শিউরে উঠেছিল। ক্ষোভে ফুঁসছিলেন দেশবাসী। দোষীদের শাস্তির জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় সোচ্চার হওয়া থেকে রাস্তায় মিছিল, কী হয়নি! কাঠুয়ায় এক ৮ বছরের বালিকাকে গত বছরের ১০ জানুয়ারি তুলে নিয়ে যায় কয়েকজন। তাকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয় একটি মন্দির চত্বরে। সেখানে তাকে ৪ দিন ধরে আটকে রাখা হয়। প্রতিদিনই গণধর্ষণের শিকার হয় সে। ৪ দিন টানা এমন পাশবিক অত্যাচার চলার পর ওই বালিকাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে অপরাধীরা। এরপর তার মাথা একটি ভারী পাথর দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়। অবশেষে সেই বিকৃত দেহ ফেলে আসা হয় একটি ঝোপে। সেখান থেকেই পুলিশ দেহটি ১৭ জানুয়ারি উদ্ধার করে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে ৬ জনের এদিন সাজা ঘোষণা হল।
পাঠানকোটের বিশেষ আদালতে ৭ জনের মধ্যে ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করা হয়। এদের মধ্যে ৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। অন্য ৩ জনের ৫ বছরের কারাবাস ও জরিমানা ধার্য করেন বিচারক। কেবল ১ জন প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায়। ৩ জন যাবজ্জীবন হওয়া ব্যক্তির মধ্যে ১ জন প্রাক্তন সরকারি আধিকারিক তথা যে মন্দিরে ওই বালিকাকে আটকে রাখা হয়েছিল সেই মন্দিরের পুরোহিত। নাম সঞ্জি রাম। ৬১ বছরের সঞ্জির আদিম লালসার শিকার হয় ওই ৮ বছরের বালিকা। টানা ৪ দিন সঞ্জির পাশবিক অত্যাচারের শিকার হয় ওই ছোট্ট মেয়েটি।
সঞ্জির বন্ধু পরবেশ কুমার ওই বালিকাকে অপহরণ করায় সাহায্য করে। একাধিকবার ওই বালিকাকে ধর্ষণও করে সে। তারও যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেছে আদালত। তৃতীয় ব্যক্তি যাকে বাকি জীবনটা জেলের পিছনে কাটাতে হবে সে হল দীপক খাজুরিয়া। পেশায় একজন পুলিশ আধিকারিক দীপক। যখন ওই বালিকাকে ৪ দিন ধরে গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার মাথাটা থেঁতলে দিতে যাচ্ছে অপরাধীরা। তখন দীপক তাদের কাছে কার্যত একটি মিনতি করে। তাকে শেষবারের জন্য আরও একবার ওই বালিকাকে ধর্ষণ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল দীপক।
এই ৩ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছাড়াও আরও ৩ জনকে ৫ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এরা হল বিশেষ পুলিশ আধিকারিক সুরিন্দর বর্মা, সাব-ইন্সপেক্টর আনন্দ দত্ত এবং হেড কনস্টেবল তিলক রাজ। প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করার জন্য এদের ৫ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সঙ্গে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা