গোটা উত্তর ভারত জুড়েই মাটির তলার জলস্তর ভয়াবহভাবে নিচে নেমে গেছে। ৭৫ থেকে ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত নেমেছে জলস্তর। যা নিয়ে রীতিমত চিন্তায় বিজ্ঞানীরা। চিন্তায় প্রশাসন। কেন্দ্রে নতুন করে তৈরি হয়েছে জল শক্তি মন্ত্রক। এই মন্ত্রকের কাছে জলস্তর সম্বন্ধে জানতে চান হরিয়ানার এক বিজেপি সাংসদ। সেই প্রশ্নের উত্তরে সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ড-এর একটি রিপোর্ট পেশ করে মন্ত্রক। সেই রিপোর্ট বলছে উত্তর ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে মাটির তলার জল ভয়াবহভাবে নিচে নেমে গেছে।
প্রথমেই নাম এসেছে পঞ্জাবের। কৃষি প্রধান এই রাজ্যে ২১৬টি কুয়ো পরীক্ষার ভিত্তিতে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী এ রাজ্যে জলস্তর নেমেছে ৮৪ শতাংশ। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তারপরই রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। এখানে জলস্তর নেমেছে ৮৩ শতাংশ। যা অবশ্যই আতঙ্কিত করছে সকলকে। ২৪৪টি কুয়ো পরীক্ষার ভিত্তিতে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর। এখানে জলস্তর নেমেছে ৮১ শতাংশ। এছাড়া দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশে জলস্তর নেমেছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। রাজস্থানের মত শুকনো এলাকায় জলস্তর নেমেছে ৪৯ শতাংশ। অন্যদিকে মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশের জলস্তর নেমেছে ৫৩ থেকে ৫৯ শতাংশের মধ্যে।
বর্ষা নামলে হয়তো এই জলস্তর কিছুটা ফের বাড়বে। কিন্তু তা আতঙ্ককে বড় একটা কমাতে পারবে না। কারণ ক্রমশ এই পরিস্থিতি আরও শোচনীয় আকার নেবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এজন্য দরকার মাটির তলা থেকে জল তোলায় লাগাম দেওয়া। কিন্তু ক্রমশ বাড়তে থাকা জনসংখ্যা, বৃষ্টির অপ্রতুলতা, পরিস্কার জলের অর্থাৎ পাণিয় জলের চাহিদা বৃদ্ধি, ক্রমশ বাড়তে থাকা আবাসন এবং শিল্পায়ন জলস্তর কমার জন্য বিশেষভাবে দায়ী বলে মনে করছে জল শক্তি মন্ত্রক। এসব কারণেই মাটির তলা থেকে জল তুলে নেওয়া প্রবলভাবে বেড়েছে। আর তার সুদূরপ্রসারী ফল হচ্ছে মারাত্মক। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও কিন্তু নীতি আয়োগের বৈঠকে দেশ জুড়ে বাড়তে থাকা জল সমস্যা রুখতে বর্ষার জল ধরে রাখার উদ্যোগে জোর দেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা