মিনিবাস ভর্তি যাত্রী। কিস্তওয়ার জেলার কেশওয়ান গ্রাম থেকে তাঁরা চলেছেন কিস্তওয়ার শহরের উদ্দেশে। সোমবার সকাল। ঝলমলে আকাশ। মাসের প্রথম দিন। মনোরম পাহাড়ি এলাকায় পাহাড়ের গা কেটে তৈরি হয়েছে বাস চলাচলের রাস্তা। ধার ধরে নেমে গেছে গভীর গিরিখাত। জম্মু কাশ্মীরের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে রাস্তাঘাট এমনই। পাহাড়ি এলাকায় রাস্তা যেমন হয় তেমনই। সেখানেই যাত্রী বোঝাই বাসটি কিস্তওয়ার শহরের উদ্দেশে দ্রুত গতিতে ছুটে চললেও সেখানে পৌঁছতে পারল না। পৌঁছতে পারলেন না বাসের যাত্রীরাও। যাত্রীদের কয়েকজনের স্থান হল হিমঘরে। কয়েকজনের হাসপাতালে।
চালকের হাতে স্ট্রিয়ারিং যতক্ষণ নিয়ন্ত্রণে ততক্ষণ পাহাড়ি রাস্তায় যাত্রীরা সুরক্ষিত। কিন্তু একবার যদি চালক বাসের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারান তাহলে আর রক্ষে নেই। সেটাই ঘটেছে এদিন। সে খারাপ রাস্তাই হোক বা অতিরিক্ত গতির কারণেই হোক অথবা ক্ষমতার বেশি যাত্রীবোঝাই করাই হোক। বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। খাদের ধার ঘেঁষে প্রাণ হাতে করে চলা বাস রাস্তা ছেড়ে গড়াতে থাকে গভীর গিরিখাতের গা ধরে। তারপর গিয়ে পড়ে একদম নিচে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৩৩ জনের। ১৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যেও কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এমনই এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেছে সোমবার সকালে।
বাসটি খাদে পড়ার পরই পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। শুরু হয় উদ্ধারকাজ। ভেঙে চুড়ে যাওয়া বাসের মধ্যে থেকে একে একে একে বার করে আনা হয় দেহগুলি। আহতদের যন্ত্রণার শব্দে তখন মনোরম পরিবেশও ভারী হয়ে উঠেছে। তবে কাশ্মীরে এমন বাস দুর্ঘটনা নতুন কিছু নয়। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। গত ২৭ জুনই ১১ জন ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বাস দুর্ঘটনায়। এদিনের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এদিনের বাস দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ট্যুইট করে শোক প্রকাশ করেছেন তিনি। শোক প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা