বাহরাইচ থেকে লখনউ। এই রুটে উত্তরপ্রদেশ পরিবহণ নিগমের বাস চলাচল করে রাতে। দূরপাল্লার বাস। ফলে রাতে রাস্তা ফাঁকা পেয়ে বাসগুলি দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে পারে। এই বাসেই যাচ্ছিলেন এক দম্পতি। অভিযোগ, মাঝ রাস্তায় ৩৭ বছরের রাজু মিশ্র হৃদরোগে আক্রান্ত হন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হওয়ার আগে বাসেই তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ এরপর বাসের চালক ও কন্ডাক্টর নাকি জোর করে সদ্য স্বামীহারা মহিলাকে স্বামী রাজু মিশ্রর মৃতদেহ সহ বাস থেকে নামিয়ে দেয়। কোনও অনুরোধেই কান দেননি তাঁরা।
যদিও বাসের কন্ডাক্টর অন্য কথা বলছেন। তাঁর দাবি, জারওয়াল রোডের কাছে রাজু মিশ্র বুকে ব্যথা হচ্ছে বলে জানান। বাসেই একজন চিকিৎসক যাত্রা করছিলেন। তিনি দেখলেও বিষয়টি তাঁর হাতের বাইরে বলে জানান সেই চিকিৎসক। তবে তিনি রাজুকে রাম নগরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
এরপর রামনগরে বাস থামিয়ে দেওয়া হয় ঠিকই কিন্তু রাজু মিশ্রকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে স্থানীয় এক চিকিৎসককে ডেকে আনা হয়। সেই চিকিৎসক রাজু মিশ্রকে পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন তাঁর আগেই মৃত্যু হয়েছে। বাসের কন্ডাক্টরের দাবি তিনি তখন ১০০ ডায়াল করেন। কিন্তু পুলিশের তরফে ফোনই তোলা হয়নি। তারপর প্রশাসনিক স্তরে যোগাযোগ করে দেহটি বারাবাঁকি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কাউকে বাস থেকে জোর করে নামিয়ে দেওয়া হয়নি।
কন্ডাক্টর এই দাবি করলেও মৃত রাজু মিশ্রর বাড়ির লোকজন একথা মানতে নারাজ। রাজুর ভাই দাবি করেছেন তাঁর বৌদিকে দাদার মৃতদেহ সমেত বাস থেকে জোর করে নামিয়ে দেওয়া হয়। যা অত্যন্ত অমানবিক। রাম নগরের প্রশাসনিক এক কর্তা অবশ্য জানান ওই কন্ডাক্টর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তাঁকে বাস নিয়ে বারাবাঁকি হাসপাতালের সামনে আসতে বলেন। কয়েকজন পুলিশকর্মীকে দেহ উদ্ধার করতে বাসের কাছে পাঠানোও হয়। কিন্তু তার আগেই ওই মহিলা বাস থেকে স্বামীর দেহ নিয়ে নেমে গিয়েছিলেন। অবশেষে ওই মহিলাকে খুঁজে রাজু মিশ্রর দেহ বারাবাঁকি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দেহটির ময়নাতদন্ত হচ্ছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা