মুখ্যমন্ত্রী বলে কথা। তাঁর ৪৯ তম জন্মদিন। বোঝাই যাচ্ছে উপহারের বহরটা কেমন হতে পারে। একের পর এক দামি দামি উপহার, ফুল, শুভেচ্ছা উপচে পড়ছে তাঁর কাছে। সমাজের নামীদামী মানুষজন তাঁকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। সেসব হাসিমুখে গ্রহণ করেছেন তিনি। কিন্তু একটি উপহার তাঁকে ভারাক্রান্ত করল। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ল জল। মাত্র ১০১ টাকার সেই উপহার তাঁকে এতটাই আনন্দ দিল, যা অনেক দামি উপহার দিতে পারল না।
ভাইপোর গলব্লাডার ক্যানসার ধরা পড়েছিল কিছুদিন আগে। কিন্তু চিকিৎসার জন্য অর্থ ছিলনা পরিবারের কাছে। ছোট ছেলেটাকে এভাবে মরতে দেওয়া তো যায়না। কিন্তু করারও কিছু নেই। অগত্যা দিনমজুরের কাজ করে দিন গুজরান করা পিসিমা সটান মুখ্যমন্ত্রীর ফোনে এসওএস মেসেজ পাঠান। সেই মরিয়া চেষ্টা কাজে আসে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ তখনই ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা চিফ মিনিস্টার রিলিফ ফান্ড থেকে পাঠান। সেই টাকায় মুম্বইয়ের এমআরসিসি শিশু হাসপাতালে ওই কিশোরের চিকিৎসা হয়। চিকিৎসার পর এখন সেই কিশোর সম্পূর্ণ সুস্থ। সেই ঘটনার পর অনেকগুলো দিন কেটে গেছে। মুখ্যমন্ত্রীও ভুলে গিয়েছিলেন সেকথা। মনে করিয়ে দিলেন সেই এসওএস মেসেজ পাঠানো পিসিমা।
মুখ্যমন্ত্রীকে সব কথা জানিয়ে একটি প্যাডের ছেঁড়া কাগজে চিঠি লেখেন আহমেদনগরের চিনচোলি গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর রেণুকা সাহিল। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে জন্মদিনের উপহার হিসাবে চিফ মিনিস্টার রিলিফ ফান্ড-এর জন্য ১০১ টাকা মানি অর্ডার করেন। লেখেন মুখ্যমন্ত্রী যেন এমন মানুষদের জন্য এভাবেই কাজ করে যান। তিনি এও জানান, দিনমজুরের সামান্য উপার্জন থেকে বাঁচিয়ে এই টাকাই তিনি পাঠাতে সমর্থ হলেন। জন্মদিনে এমন একটা উপহার হাতে পাওয়ার পর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে আসে। কেঁদে ফেলেন তিনি। অবশ্যই সেই অশ্রুজল আনন্দেরই ছিল। হয়তো জীবনে অনেক দামি উপহারের কথা মনে থাকবে না তাঁর। কিন্তু এই উপহারটা চিরকাল মনে থেকে যাবে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা