পরনে একটা প্যান্ট। পায়ে জুতো। ডান হাতের আঙুলে সোনার আংটি। বাঁ হাতে একটা ডিজিটাল ঘড়ি। গায়ে কোনও জামা নেই। এই অবস্থায় নদী ধারে পড়েছিল দেহটি। চোখে পড়ে ২ মৎস্যজীবীর। তাঁরাই খবর দেন। তারপর পুলিশ হাজির হয় নেত্রাবতী নদীর পাড়ে। নদীর জল তখনও ছলকে লাগছে দেহে। যে দেহটি উদ্ধার হয়েছে তা যে সিসিডি কর্তা ভিজি সিদ্ধার্থের সে বিষয়ে নিশ্চিত পুলিশ। নিখোঁজ হওয়ার ৩৬ ঘণ্টা পর তাঁর দেহ মিলল। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষ ও সংবাদমাধ্যমের ভিড় জমে নদীর পাড়ে।
গত সোমবার রাতে গাড়িতে নেত্রাবতী নদীর ব্রিজের ওপর পৌঁছন বছর ৬০-এর সিদ্ধার্থ। গাড়ির চালককে ব্রিজের শেষ প্রান্তে গিয়ে অপেক্ষা করতে বলেন। তিনি হেঁটে ওখানে পৌঁছবেন বলে জানান। সেইমত চালক গাড়ি নিয়ে ব্রিজের অন্য প্রান্তে অপেক্ষা করছিলেন। ১ ঘণ্টা কেটে যায়। শুরু হয় বৃষ্টি। এই অবস্থায় মালিক ফিরছেন না দেখে চালক গাড়ি নিয়ে গোটা ব্রিজ ঘুরে ফেলেন। কিন্তু কোথাও সিদ্ধার্থকে দেখতে পাননি। তারপরই তিনি পুলিশে খবর দেন। এদিকে ২ মৎস্যজীবী দাবি করেন সোমবার রাতে তাঁরা কাউকে ওই ব্রিজ থেকে জলে ঝাঁপ দিতে দেখেন। এরপর মঙ্গলবার টানা নেত্রাবতী নদীতে তল্লাশি করেও দেহ পাওয়া যায়নি। অবশেষে বুধবার ভোরে উদ্ধার হল দেহটি। ব্রিজ থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে একটি ফাঁকা জায়গায় নদীর চর থেকে দেহটি উদ্ধার হয়।
ভারতের অন্যতম বৃহৎ কফি চেন কাফে কফি ডে-র মালিক সিদ্ধার্থ কিছুদিন আগে সিসিডি-র সব কর্মীদের উদ্দেশ্যে লেখেন যে তিনি এই সংস্থাকে দাঁড় করানোর সবরকম চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। কর্মীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারার জন্য দুঃখও প্রকাশ করেন তিনি। ঋণের বোঝা যে তিনি আর সহ্য করতে পারছেন না তাও জানান।
ঋণের বিশাল বোঝা থেকে মুক্তি পেতে বেঙ্গালুরুর আইটি সংস্থা মাইন্ডট্রি-র তাঁর হাতে থাকা ২০ শতাংশ শেয়ার বেচে দেন সিদ্ধার্থ। লারসেন এন্ড টুবরো-র কাছে বেচে দেন। যা থেকে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকাও পান। কিন্তু সেই টাকার পরেও ঋণের বোঝা থেকে যায়। যা তিনি কোনও উপায়েই শোধ দিতে পারছিলেন না। কোকাকোলা সংস্থার সঙ্গেও তিনি সিসিডি-র ইকুইটি বেচার বিষয়ে কথা চালু করেছিলেন। তারপরই এই ঘটনা গটে গেল। পুলিশের অনুমান দেনার চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যাই করেছেন সিদ্ধার্থ। তাঁর আর একটা পরিচয় তিনি বিজেপি নেতা এসএম কৃষ্ণার বড় জামাই। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা