বিটনুন, যা সাধারণভাবে পরিচিত রক সল্ট বা শিলা নুন হিসাবে। সাধারণত মানুষ যে নুন দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করেন তার উৎস সমুদ্রের নোনা জল। কিন্তু বিটনুন পাহাড়ের শিলাখণ্ডের খাঁজে হয়ে থাকে। খুব অল্প পরিমাণেই পাওয়া যায় এই নুন। সাধারণত এই নুন আধ্যাত্মিক ক্রিয়া বা আধ্যাত্মিক কাজের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অবস্থায় ব্যবহার করা হয়। বিশেষত কোনও আধ্যাত্মিক কারণে উপবাসের পর খেতে গিয়ে নুন খাওয়ার রীতি হিন্দুধর্মে নেই। তাই সেসময় বিটনুন খাওয়া হয়।
এই নুন নোনতাও হয়। আবার এটি ঠিক নুনও নয়। ভারতে এই নুন সাধারণত আসে পাকিস্তান থেকে। হিমালয়ের কোলে যে সামান্য বিটনুন পাওয়া যায় তার একটা বড় অংশই পাওয়া যায় পাকিস্তানে। উত্তরপ্রদেশের সাধুরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যেহেতু তা পাকিস্তান থেকে আসছে তাই তা ব্যবহার তাঁরা করবেননা।
এখন শ্রাবণ মাস চলছে। শ্রাবণের প্রায় শেষ। এই সময় সাধু, মহাত্মারা উপবাস করে থাকেন। তাই উপবাসের পর তাঁরা যে ভোজন গ্রহণ করেন তাতে নুন থাকেনা। নুনের অভাবটা বিটনুন দিয়ে মিটিয়ে নেন তাঁরা। এই বিটনুনের একটা বড় অংশ আসে পাকিস্তান থেকে। ফলে সাধুরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা সোমবার থেকে এই বিটনুন আর ব্যবহার করবেন না। নুনের স্বাদ ছাড়াই খাবার গ্রহণ করবেন। সাধ্বী জানিয়েছেন, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারকে সামনে রেখে যদি পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে যাবতীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকে তবে তাঁরাও পাকিস্তান থেকে আসা কোনও খাদ্য গ্রহণ করবেন না।
বারাণসীর দুর্গা মঠে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাধ্বী গীতম্ভরা বলেন তাঁরা তাঁদের এই বিটনুন বয়কটের সিদ্ধান্ত সোশ্যাল মিডিয়া মারফত সকলকে জানিয়েও দিয়েছেন। পাকিস্তানের কালাবাগ, ওয়ারচা এবং খেরা এলাকার খনিতে এই বিটনুন প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। যার একটা বড় অংশ ভারতে পাঠাত পাকিস্তান।
আধ্যাত্মিক কর্মকাণ্ডে বিটনুনের ব্যবহার ভারতে বহু পুরনো। তবে সাধুরা বয়কটের পাশাপাশি এটাও হয়তো সত্যি যে পাকিস্তান যদি ভারতের সঙ্গে সব ধরণের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করেই থাকে তাহলে বিটনুনও তারা ভারতে পাঠাবে না। ফলে পাকিস্তান থেকে আসা বিটনুন এমনিতেই পাওয়া যেতনা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা