গুজরাট বা মহারাষ্ট্রে যেভাবে প্রবল বৃষ্টি পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরাল করে তুলেছে তাতে সামান্য হলেও লাগাম পড়েছে। কারণ এই ২ রাজ্যে বৃষ্টি কিছুটা হলেও কমেছে। ফলে অনেক এলাকা থেকে জল ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে। তবে স্বাভাবিক পরিস্থিতি এখনও দুরস্ত। বহু গ্রাম এখনও জলের তলায়। শহরের জল অনেকটা নেমে গেলেও গ্রামগুলি এখনও বানভাসি। যদিও গুজরাট, মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও ক্রমশ খারাপ হচ্ছে দাক্ষিণাত্যের ২ রাজ্য কর্ণাটক ও কেরালার অবস্থা।
কর্ণাটকের ১৭টি জেলার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। তারমধ্যেই চলছে আরও বৃষ্টি। আকাশপথে বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। বন্যা বিধ্বস্ত পরিবার যাঁরা সব হারিয়েছেন তাঁদের জন্য পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করেছেন তিনি। এ রাজ্যে টানা বৃষ্টিতে নদীগুলো বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। গ্রামের পর গ্রাম জলের তলায়। জলের তলায় ফসল। তারসঙ্গে যোগ দিয়েছে প্রবল ধস। পাহাড়ি এলাকাগুলোতে প্রবল ধস নামছে। ফলে ধসে হারিয়ে গেছে অনেক বাড়ি, অনেকের বন্যার জলে ভেসে গেছে সাজানো সংসার। এঁদের জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
জল ক্রমশ বেড়েছে এখানকার সব নদীতে। কৃষ্ণার জল বেড়ে রায়বাগ এলাকা সম্পূর্ণ ভাসিয়ে দিয়েছে। একটি বাড়ির পুরোটাই চলে গেছে জলের তলায়। সেই বাড়ির কেবল চালটুকু দেখা যাচ্ছে। আর সেখানেই নজরে পড়ে এক ১০ ফুট লম্বা কুমির। চারধারে যতদূর দেখা যাচ্ছে জল আর জল। সেই জল থেকে বাঁচতে অগত্যা চালেই আশ্রয় নেয় কুমিরটি। পরে বন দফতরের উদ্ধারকারীরা সেখানে হাজির হয়ে ফের জলে নেমে ভেসে পালায় বিশাল চেহারার এই জলের আতঙ্ক।
কর্ণাটকের হাম্পির মত হেরিটেজ সাইট পর্যন্ত জলের তলায়। গোদাবরীর জল হুহু করে ঢুকছে এখানে। একের পর এক মন্দির জলের তলায় চলে যাচ্ছে। পর্যটক থেকে স্থানীয় মানুষ ব্যাপক সমস্যা পড়েছেন। তারমধ্যে আরও জল বাঁধ থেকে ছাড়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে হাম্পির আরও কতটা করুণ দশা হতে চলেছে তা অনুমেয়। কোঙ্কণ উপকূল জুড়ে কর্ণাটকে বৃষ্টি যেন থামতেই চাইছে না। এমনভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা এখনই বোঝা যাচ্ছেনা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা