প্রবল বৃষ্টির জেরে গোটা শহরটাই কার্যত জলের তলায় চলে গেছে। গা বেয়ে বয়ে যাওয়া গঙ্গার জলও ফুলে ফেঁপে উপচে চলে এসেছে রাস্তায়। রাস্তা আর গঙ্গা আলাদা করে বোঝা দায়। এই অবস্থায় বারাণসী শহরের ২ প্রধান শ্মশানঘাট হরিশ্চন্দ্র ঘাট, মণিকর্ণিকা ঘাট জলের তলায় চলে গেছে। কিন্তু মৃত্যু তো থেমে থাকেনা। জল ভেঙেই দেহ নিয়ে আসছেন মানুষজন। অথচ সৎকারের জায়গা জলের তলায়। ফলে মৃতদেহের জন্য চিতা আপাতত বারাণসীর রাস্তাতেই সাজাচ্ছেন ডোমেরা। সেখানেই পোড়ানো হচ্ছে দেহ।
বারাণসী শহরের রাস্তাঘাট জলের তলায়। তারমধ্যেই যেখানে একটু ধার করে শুকনো ডাঙা পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই সৎকার হচ্ছে। জ্বলে উঠছে চিতা। এমন পরিস্থিতি যে চিতা জ্বালানোর মত সামান্য শুকনো জায়গাও সহজে মিলছে না। ফলে সৎকারে আসা সকলকে সেখানে যেতেও দেওয়া হচ্ছেনা। কেবল মুখাগ্নি সহ অন্যান্য পারলৌকিক ক্রিয়া যিনি করবেন কেবল তাঁকে ও আর ২-১ জনকে চিতা পর্যন্ত যেতে দেওয়া হচ্ছে। বাকিরা দাঁড়িয়ে থাকছেন মূল রাস্তায়।
এই অবস্থার জন্য অবশ্য ডোমেরা স্থানীয় প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় চাপিয়েছেন। তাঁদের দাবি প্রশাসনকে বারবার বলা হয়েছে চিতা জ্বালানোর জন্য উঁচু বেদী করে দিতে। কিন্তু তা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় টাকা হাতে থাকা সত্ত্বেও তা করে উঠতে পারেনি প্রশাসন। এদিকে মওকা বুঝে এখন পারলৌকিক ক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাঠ থেকে অন্যান্য সামগ্রির দাম হুহু করে বাড়ছে বারাণসী শহরে।
প্রসঙ্গত বারাণসী শহরে শুধু শহরের মৃতদেহই আসেনা। দূর দূর থেকে বহু কষ্ট করে দেহ বারাণসীতে পোড়াতে নিয়ে আসেন পরিবারের লোকজন। পাশের রাজ্য বিহার থেকেও সৎকারের জন্য আসে দেহ। অনেকটা পথ অতিক্রম করে দেহ নিয়ে হাজির হন পরিবারের লোকজন। কারণ সকলের বিশ্বাস বারাণসীতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হলে সেই আত্মা সেখান থেকেই মুক্তি পেতে পারে। আর এই বিশ্বাসেই বহু মানুষ পরিজনের দেহ নিয়ে হাজির হন বারাণসীতে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা