লাড্ডু নিঃসন্দেহে বেশ উপাদেয় খাবার। কিন্তু কাঁহাতক শুধু লাড্ডু খেয়ে থাকা যায়! সকাল নেই, বিকেল নেই, রাত নেই, সামনে হাজির হচ্ছে লাড্ডুর প্লেট। ভাত, রুটি, ডাল, সবজি কেমন খেতে তা তো মোটামুটি ভুলতে বসেছেন তিনি। কিছু করারও নেই। খেতে চাইলেই স্ত্রী এনে হাজির করছেন লাড্ডুর থালা। এভাবে লাড্ডু খেতে খেতে অরুচি হয়ে কার্যত চোঁয়া ঢেঁকুর তুলতে তুলতে অবশেষে নিরুপায় হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন স্বামী।
নাহ! আর সহ্য হচ্ছে না। এবার এই লাড্ডুর হাত থেকে তাঁর মুক্তি চাই। আর সেই মুক্তি জন্য স্ত্রীর হাত থেকে রেহাই পেতে হবে। অগত্যা ডিভোর্স চাই। এবার সেই ডিভোর্সের আবেদন জানিয়ে একটি পারিবারিক আদালতে আবেদন জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মেরঠের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি।
ঘটনার সূত্রপাত এক তান্ত্রিকের হাত ধরে। স্বামীর কিছু শারীরিক সমস্যা দূর করতে স্ত্রী হাজির হয়েছিলেন এক তান্ত্রিকের কাছে। তান্ত্রিক সব শুনে ওই মহিলাকে বিধান দেন যে যদি স্বামীকে সুস্থ করে তুলতে হয় তবে তাঁকে শুধু লাড্ডুর ওপর রাখতে হবে। ‘প্রেসক্রিপশন’ও মুখে বলে দেন ওই তান্ত্রিক। সকালে ৪টি বড় বড় লাড্ডু। রাতে ৪টি বড় বড় লাড্ডু। ব্যস আর কিচ্ছু না। অন্য কিছু খেতে চাইলেও দেওয়া যাবে না। কড়া ভাবে স্রেফ লাড্ডুর ওপর রাখতে হবে ওই ব্যক্তিকে। অন্য কোনও আবদারে আমল দিলে চলবে না। স্ত্রী তারপর থেকে তান্ত্রিকের কথা মেনে স্বামীর মঙ্গল চেয়ে স্বামীকে সুস্থ করতে সেই যে দু’বেলা নিয়ম করে লাড্ডু খাওয়ানো শুরু করেছেন, এখনও থামেননি।
প্রথম দিকে স্ত্রীর নির্দেশ মেনে বেঁধে দেওয়া লাড্ডুর রেশনেই দিন গুজরান করছিলেন ওই ব্যক্তি। মুখ বুজে ওটাই খাচ্ছিলেন। কিন্তু এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে লাড্ডু দেখলেই আঁতকে উঠছেন তিনি। লাড্ডু এখন তাঁর জীবনে এক অভিশাপের চেহারা নিয়েছে। এক দুঃস্বপ্ন। এদিকে আদালতও ফাঁপরে পড়েছে। এমন মামলা যে আগে কখনও আসেনি।
ঠিক হয়েছে স্বামী-স্ত্রী ২ জনকেই কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হবে। কিন্তু যিনি কাউন্সেলিং করবেন তিনি মনে করছেন ওই মহিলার বিশ্বাসকে ভাঙা হয়তো সম্ভব নয়। কারণ তিনি কঠোরভাবে বিশ্বাস করেন লাড্ডু ভক্ষণই স্বামীর সেরে ওঠার একমাত্র মার্গ। তাই আর অন্য কোনও রাস্তাই তিনি মেনে নেবেন না। এই অবস্থায় কাউন্সিলরও বুঝে উঠতে পারছেন না লাড্ডুর হাত থেকে ওই ব্যক্তিকে মুক্ত করার উপায় কী! — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা