বর্তমান সমাজের কাছে একটা উদাহরণ তৈরি করলেন প্রতিমা বেহেরা। গ্রামে বিধবাবিবাহ এখনও বেশ জটিল। গ্রামের সমাজ তা সহজে মেনে নিতে পারে না। যদিও বা পারে তো স্বামীহারা মেয়েটির শ্বশুরবাড়ি তা মেনে নিতে পারে না। নানা জটিলতা। সেখানে পুত্রবধূর আবার বিয়ে দিয়ে সমাজের কাছে একটা উদাহরণ তৈরি করলেন প্রতিমা। তিনি গ্রামের সরপঞ্চও। যথেষ্ট দাপট রয়েছে গ্রামে। তাঁর ছেলের মৃত্যুর পর পুত্রবধূ লিলি বেহেরা বিধবা হন।
মাত্র ২০ বছর বয়সে স্বামীহারা লিলিকে কিন্তু নিজের মেয়ের মত করেই ফের বিয়ে দিলেন প্রতিমা। ওড়িশার তালচের এলাকার গোবারা পঞ্চায়েতের সরপঞ্চ তিনি। তিনি না চাইলে লিলির বিয়ে হওয়া ওই সমাজে যে মুশকিল ছিল তা মেনে নিচ্ছেন সকলেই। সেখানে এক মায়ের ভূমিকা পালন করলেন শাশুড়ি। এই বছরই ফেব্রুয়ারিতে প্রতিমার ছেলে রঞ্জনের সঙ্গে বিয়ে হয় লিলির। কিন্তু গত জুলাইতে একটি কয়লাখনি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় রঞ্জনের।
ছেলের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে প্রতিমা বুঝতে পারেন মাত্র ২০ বছর বয়সে সবে বিয়ের পরই বিধবা লিলির সারা জীবন কাটা মুশকিল। তার জীবনটাই নষ্ট হয়ে যাবে। এটা বোঝার পর তিনি নিজে লিলিকে বোঝান ফের বিয়ে করার জন্য। অনেক বোঝানোর পর লিলি রাজি হন। প্রতিমা তখন তাঁরই দাদার ছেলে সংগ্রাম বেহেরার সঙ্গে লিলির বিয়ের ঠিক করেন। প্রতিমা জানান, তিনি ছেলে হারিয়েছেন। তা কোনওদিন পূরণ হওয়ার নয়। কিন্তু তিনি তাঁর পুত্রবধূকে ভালবাসেন। তাই চান তিনি যেন জীবনটা সুখে কাটাতে পারেন। লিলি আর সংগ্রামের বিয়েটা প্রতিমা দাঁড়িয়ে থেকে দেন। তবে এবার আর ধুমধাম হয়নি। একটি মন্দিরে ২ পরিবারের সদস্যরা দাঁড়িয়ে বিয়েটা সম্পূর্ণ করেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা