কথায় বলে পুলিশ নাকি চাইলে খড়ের গাদা থেকেও সূচ খুঁজে আনতে পারে। আর দিল্লি পুলিশের সে বিষয়ে সুনাম আছে। সেখানে বিশালকায় একটা হাতিকে খুঁজতে দিল্লি পুলিশের ২ মাস লেগে যাওয়ায় অবাক অনেকেই। হন্যে হয়ে খুঁজে অতিকায় হাতি লক্ষ্মীকে শেষ পর্যন্ত খুঁজে পেল দিল্লি পুলিশ। যমুনার ধারে খদর এলাকার জঙ্গলে তার খোঁজ পান পুলিশকর্মীরা। যা বিখ্যাত অক্ষরধাম মন্দিরের খুব কাছেই। লক্ষ্মীকে উদ্ধার করে আনার পর তাকে বন বিভাগের আধিকারিকদের হাতে তুলে দিয়ে কার্যত হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন দিল্লি পুলিশের কর্তারা।
কিন্তু কেন এক হাতিতে নিয়ে এত খোঁজাখুঁজি? দিল্লিতে ৬টি পরিবার হাতি পুষছিল বাড়িতে। কিন্তু তাদের যেভাবে রাখা হচ্ছিল তা আইন বিরুদ্ধ বলে দিল্লি আদালতের কাছে জানান বন বিভাগের আধিকারিকরা। সেই মামলায় আদালত নির্দেশ দেয় ৬টি হাতিকেই যেন উদ্ধার করে বন দফতর তাদের অভয়ারণ্যে ছেড়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করে। সেই নির্দেশ মেনে ৫টি হাতিকে অভয়ারণ্যে পাঠানো হলেও লক্ষ্মীকে উদ্ধার করা বাকি ছিল। সেই লক্ষ্মীকে উদ্ধার করতে গিয়ে তার মালিকদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় বন আধিকারিকদের। অগত্যা খালি হাতে ফিরে এসে তাঁরা পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ লক্ষ্মীকে উদ্ধার করতে গিয়ে দেখে লক্ষ্মীও নেই। তার মালিকও নেই। তার মাহুতও নেই। এটা জুলাইয়ের ঘটনা। তারপর থেকে হন্যে হয়ে লক্ষ্মীকে খুঁজে বেড়ায় দিল্লি পুলিশ। কিন্তু তার খোঁজ মিলছিল না। অবশেষে খুঁজতে খুঁজতে সম্প্রতি তারা যমুনার ধারে খদর এলাকার জঙ্গলে হাতির পায়ের ছাপ দেখতে পায়। সঙ্গে হাতির গোবর। পুলিশ নিশ্চিত হয় এটা নিশ্চিত লক্ষ্মীর। কারণ অন্য ৫টি হাতিকে তো ইতিমধ্যেই অভয়ারণ্যে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ওই জঙ্গলে খোঁজ চালিয়ে গত মঙ্গলবার হাতিটির খোঁজ পায় পুলিশ। তাকে উদ্ধার করে। হাতির মালিক ইউসুফ ও মাহুত সাদ্দামকে গ্রেফতার করে তারা। বুধবার হাতিটিকে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এতদিনের চেষ্টার পর লক্ষ্মীর হদিশ পেয়ে দিল্লি পুলিশ হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে। কারণ অত বড় একটা হাতি খুঁজে পেতে দিল্লি পুলিশের কালঘাম ছুটে যাচ্ছে, এটা অনেকেই বাঁকা চোখে দেখছিলেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা