National

৫ দিনের কঠিন লড়াইয়ের পর পাকড়াও মানুষখেকো

গত সপ্তাহের বুধবার থেকে শুরু হয়েছিল তার খোঁজ। কিন্তু কোথায় সে? তাকে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও হদিস মিলছিল না। উন্নত প্রযুক্তি থেকে পুরনো নিয়মের হাতি, সবই খোঁজ করতে লাগানো হয়েছিল। দল ভাগ করে খোঁজ চলছিল ঘন জঙ্গলে। কিন্তু অত ঘন জঙ্গলের কোথায় যে সে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছে তা আকাশপথে নজরদারি করা ড্রোনও বুঝে উঠতে পারছিলনা। অবশেষে ৫ দিন ধরে দিনরাত এক করে খোঁজ চালানোর পর ধরা সম্ভব হল মানুষখেকো বাঘটিকে।

তাকে হত্যা করা যাবেনা একথা আগেই জানিয়েছিল বন দফতর। তাই তাকে ঘুমপাড়ানি ওষুধ দিয়ে অচেতন করে পাকড়াও করেন অভয়ারণ্যের আধিকারিক ও বন দফতরের কর্মীরা। গত রবিবার দুপুরে তাকে কর্ণাটকের বান্দিপুর টাইগার রিজার্ভের ঘন জঙ্গল থেকে পাকড়াও করা হয়।


বয়স ৪ থেকে ৬-এর মধ্যে। মাস দুয়েক হল বাঘটি মানুষখেকোতে পরিণত হয়েছে। ইতিমধ্যেই তার শিকার হয়েছেন ২ জন। প্রথমজন মাঠে গরু চড়িয়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ফিরছিলেন। সেই সময় তাঁর ওপর চড়াও হয় বাঘটি। সেটিই তার প্রথম মানুষ শিকার। সেটা ছিল সেপ্টেম্বরে। এরপর বোধহয় মানুষের রক্তের স্বাদ পেয়ে যায় সে। কিছুদিন আগে ফের সে মানুষ শিকার করে। এবার তার পেটে যান এক অশীতিপর বৃদ্ধ।

মানুষখেকোয় পরিণত হওয়া এই বাঘকে তো আর ছেড়ে রাখা যায়না। তাই পুরোদমে বাঘ ধরতে নেমে পড়ে বন দফতর। তবে তাদের কাছে বাঘটিকে গুলি করার কোনও নির্দেশ ছিলনা। তাদের কেবল বাঘটিকে জ্যান্ত অবস্থায় ধরতে বলা হয়। ফলে শুরু হয় জঙ্গল চষে ফেলা। আধুনিক যন্ত্রের সাহায্য নেওয়া। হাতির সাহায্য নেওয়া।


কর্ণাটকের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ হল বান্দিপুর টাইগার রিজার্ভ। ৮৭২ বর্গ কিলোমিটারের ঘন জঙ্গলে বাঘের নিশ্চিন্ত বসবাস। চামারাজানগর জেলায় অবস্থিত এই অভয়ারণ্যের একটি বাঘ মানুষখেকো হয়ে যাওয়ায় চিন্তা বাড়ে বন দফতরের। যাতে আর কেউ তার শিকার না হন সেজন্য উঠে পড়ে লাগেন আধিকারিকরা। বাঘের খোঁজ পেতে কাজে লাগানো হয় ড্রোন। যা আকাশপথে জঙ্গলের ওপর ঘুরে বাঘটি কোথায় লুকিয়ে আছে তার খোঁজ শুরু করে। এছাড়া ৩টি হাতিতে জঙ্গল চষে ফেলা শুরু হয়। ২০০টি ক্যামেরাও লুকিয়ে রাখা হয় জঙ্গলের আনাচে কানাচে। ৫টি দল তৈরি করে খোঁজ চলে মানুষখেকো বাঘটির।

এভাবে টানা ৫ দিন ধরে চলে এই তল্লাশি পর্ব। মানুষখেকোর খবর পেয়ে কয়েকজন শিকারি আবার হায়দরাবাদ থেকে এখানে হাজির হন। কিন্তু তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয় শিকার নয়, বাঘটিকে গুলি করে নয়, জ্যান্ত অবস্থায় তাকে পাকড়াও করার আদেশ রয়েছে। তাই শিকারির দরকার নেই। দরকার পড়লও না। অবশেষে ঘুম পাড়ানি ওষুধেই কাবু হল মানুষখেকো। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button