জেট এয়ারওয়েজের কর্মী ছিলেন তিনি। কিন্তু মাস ছয়েক আগে জেট এয়ারওয়েজ লাটে ওঠায় চাকরি যায় তাঁর। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও এক পুত্র। পুত্রটি বিশেষভাবে সক্ষম। ফলে তার চিকিৎসার জন্য অর্থের প্রয়োজন পড়ে সবসময়। চাকরি হারানোর পর জীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা তো ছিলই। তবু ব্যাঙ্কে জমানো ৯০ লক্ষ টাকা ছিল বড় ভরসা। কিন্তু পঞ্জাব-মহারাষ্ট্র কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেডের ৩ হাজার ৮৩০ কোটি টাকার দুর্নীতি সামনে আসার পর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ওই ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের তাঁদেরই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
প্রথমে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলে গ্রাহক পিছু ১ হাজার টাকার বেশি তোলা যাবেনা। তারপর তা বাড়িয়ে করে ১০ হাজার। তারপর তাও বাড়িয়ে করে ২৫ হাজার। গত ১৪ অক্টোবর সেই লিমিট বাড়িয়ে করে ৪০ হাজার। এতে গ্রাহকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের দাবি, তাঁরা তো কোনও দোষ করেননি। তাঁদের যে টাকা ব্যাঙ্কে রাখা রয়েছে তা তাঁদেরই কষ্টার্জিত অর্থ। সেই টাকা তাঁদের তোলার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। তাহলে তাঁদের টাকাই তাঁরা তুলতে পারবেননা কেন? এই নিয়ে ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। সেই বিক্ষোভে সামিল হচ্ছিলেন ৫১ বছরের সঞ্জয় গুলাটি।
তাঁর ছেলের চিকিৎসার জন্য অর্থের প্রয়োজন। চাকরিও গেছে। ফলে একমাত্র ভরসা ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট। কিন্তু সেখানেও আরবিআই টাকা তোলার ওপর প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। ফলে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেননা সঞ্জয়বাবু। গত সোমবার বিকেলে অন্য গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতিবাদে অংশ নিয়ে বিকেলে বাড়ি ফেরেন তিনি। তারপর খেতে বসেন। সেই খাওয়ার টেবিলেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। সঞ্জয় গুলাটির মৃত্যুর জন্য পিএমসি ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের টাকা তোলার লিমিটকেই দায়ী করছেন অন্য গ্রাহকরা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা