শুনতে অবাক লাগছে! চুরির জন্য আর কিছু পেল না! সোনাদানা, টাকা পয়সা, মূল্যবান সামগ্রি এমনকি অন্য কোনও আনাজপাতি! ছুরি করল পেঁয়াজ, রসুন, টমাটো! তাও আবার গাড়ি এনে রাতের অন্ধকারে, সন্তর্পণে চুরি করল! ঝুঁকি নিল। তারপর সব ফেলে কেবলমাত্র পেঁয়াজ, রসুন আর টমাটোর বস্তা নিয়ে রাতের অন্ধকারেই গা ঢাকা দিল তারা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু অনেক ধরনের চুরি পুলিশ দেখেছে। এমন আজব বস্তু চুরির তদন্ত তাদের করতে হয়নি। ফলে সেদিক থেকে পুলিশের কাছে চোর ধরা বেশ চ্যালেঞ্জিংও বটে!
ঘটনাটি ঘটেছে লখনউয়ের ইন্দিরা নগর এলাকায়। এখানেই আনাজের ব্যবসা করেন পাপ্পু চৌরাসিয়া। রাস্তার ধারেই দোকান। তবে চালু দোকান। বিক্রিবাটাও ভাল। গত মঙ্গলবার রাতে বিক্রিবাটা শেষ করে অন্য দিনের মতই তাঁর আনাজপাতি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে কাঠের দরজা বন্ধ করে বাড়ি ফিরে যান। পরদিন সকালে দোকান খুলতে এসে তো তাঁর চক্ষু চড়কগাছ! একি কাণ্ড! দোকানের চারধারে ছড়িয়ে আছে নানা ধরনের আনাজ। বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, আলু এবং এমন নানা আনাজ। নেই শুধু ৩টি বস্তা। পেঁয়াজ, রসুন ও টমাটোর বস্তা।
দ্রুত পাপ্পু অন্য দোকানদারদের খবর দেন। এলাকায় হৈচৈ পড়ে যায় এই খবরে। এরপর পাপ্পু পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। পাপ্পুর দাবি তাঁর প্রায় ১২ হাজার টাকার মাল নিয়ে পালিয়েছে চোরেরা। তাঁর দৃঢ় ধারণা চোর একা ছিলনা। তারা সংখ্যায় একাধিক ছিল। আর ওই ৩ বস্তা নিয়ে এমনি পালানো সম্ভব নয়। ফলে তাদের সঙ্গে কোনও একটি যানবাহন ছিল। পাশাপাশি পাপ্পু এটা বুঝতে পারছেন না চুরি যদি করলই তাহলে অন্য আনাজও তো এত ছিল। তার একটিতেও হাত দিল না কেন চোরেরা!
কেন অন্য আনাজে হাত না দিয়ে কেবল পেঁয়াজ, রসুন আর টমাটো নিয়ে চম্পট দিল চোরেরা তার ব্যাখ্যা অবশ্য অনেকের কাছেই পরিস্কার। হুহু করে বাড়ছে এই ৩টি জিনিসের দাম। পেঁয়াজ বিকোচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। টমাটো কোথাও ৭০ তো কোথাও ৮০ টাকা কেজি। অনেক জায়গায় তার চেয়েও বেশি। রসুন ২০০ টাকা কেজি দর ছুঁয়েছে। ক্রমশ বাড়তে থাকা নিত্য দিনের হেঁসেলের প্রয়োজনীয় এই ৩ সামগ্রির দামই হয়তো এমন এক অভিনব চুরির নেপথ্য কাহিনি। আর তা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা