এক নামী ওষুধ সংস্থার মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টিটিভ হিসাবে কর্মরত মহিলার দাবি দিনের পর দিন তাঁকে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণ করেছে এক চিকিৎসক। মুখ বুজে সেই পাশবিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। তারওপর চলেছে ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল। স্বামীকে দেখিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো। ফলে সংসার ভাঙার ভয়ে চিকিৎসক যখনই তাঁকে ডেকেছে তখনই তার বাড়িতে যেতে হয়েছে ওই মহিলাকে। কেন যাচ্ছেন তা জেনেও সেই ব্ল্যাকমেল দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতে হয়েছে। আর সেই সুযোগেই গত মে মাস থেকে বহুবার বাড়িতে ডেকে ওই মহিলাকে ধর্ষণ করেছে ওই চিকিৎসক। এমনই এক ভয়ংকর অভিযোগ জমা পড়ল পুলিশের কাছে। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত গত মে মাসে। যেমন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টিটিভরা চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের বিভিন্ন ওষুধ সম্বন্ধে জানান তেমনই দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করেন ওই মহিলা। প্রথম সাক্ষাতের পর ওই মহিলাকে কফি খেতে একটি কফি শপে আসতে বলেন ওই চিকিৎসক। দিল্লির গ্রিন পার্ক এলাকায় ওই মহিলা চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করে কফি খান। কথায় কথায় তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর গত ১০ মে ওই এমআর মহিলাকে বাড়িতে ডাকেন ওই চিকিৎসক।
বাড়িতে হাজির হলে ওই মহিলাকে কোল্ড ড্রিংকস খেতে দেয় ওই চিকিৎসক। মহিলার দাবি ওই কোল্ড ড্রিংকসে ঘুমের ওষুধ গোছের কিছু মেশানো ছিল। ওটা খাওয়ার পর আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন ওই মহিলা। আর সেই সুযোগে তাঁকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে ওই চিকিৎসক। প্রবল বাধাদানের চেষ্টা করেন ওই মহিলা। কিন্তু ফল হয়নি। শুধু ধর্ষণই নয়, ওই মহিলার বেশ কিছু অশ্লীল ছবিও ক্যামেরাবন্দি করে ফেলে ওই চিকিৎসক। এরপর সেই ছবি দেখিয়ে শুরু হয় ব্ল্যাকমেল। চিকিৎসক ওই মহিলাকে জানায় হয় তিনি তার ডাকে সাড়া দিয়ে তার বাড়িতে আসবেন, নয়তো ওই ছবি সে ওই মহিলার স্বামীর কাছে পৌঁছে দেবে। এমন অশ্লীল ছবি স্বামীর চোখে পড়লে সংসার ভাঙার আতঙ্ক পেয়ে বসে ওই মহিলাকে। তিনি বাধ্য হয়ে চিকিৎসকের লালসায় সাড়া দিতে থাকেন।
এই সময় এমনভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকে। আর সহ্য করতে না পেরে গত সেপ্টেম্বরে ওই মহিলা তাঁর এক পরিচিতকে সব কথা জানান। তিনিই ওই মহিলাকে সাহস জোগান পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা করার। অবশেষে ওই মহিলা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে। ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেলের অভিযোগে গ্রেফতারও করেছে। চিকিৎসকের কাছ থেকে তার সেই মোবাইলটিও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। যে মোবাইলে ছবি তুলে ওই মহিলাকে ব্ল্যাকমেল করত ওই চিকিৎসক। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা