হাতি তাড়াতে আর লঙ্কা ব্যবহার করা যাবে না। কড়া নির্দেশে জানিয়ে দিল উত্তরখণ্ড হাইকোর্ট। হাতির পাল তাড়াতে কোনওভাবেই আর লঙ্কার ব্যবহার করতে পারবেন না তাঁরা এটা শোনার পর রীতিমত চিন্তায় পড়েছেন হাতিদের যাতায়াতের পথের আশপাশে গড়ে ওঠা জনবসতির বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি দিনের পর দিন হাতির পাল এসে তাঁদের ফসল খেয়ে যায়। তছনছ করে জনবসতি। মানুষকেও আক্রমণ করে। এ থেকে বাঁচতে তাঁদের একমাত্র হাতিয়ার ছিল লঙ্কা। এখন তাঁরা কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। অন্যদিকে পশুপ্রেমী সংগঠনগুলি জানিয়েছে এভাবে হাতি তাড়াতে লঙ্কার ব্যবহার হাতিদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ। তা বন্ধ হওয়া দরকার ছিল।
কীভাবে লঙ্কা ব্যবহার করে হাতি তাড়ানো হত? উত্তরাখণ্ডের তরাই এলাকায় যেমন হাতিদের বহুকালে বসবাস। তেমনই নেপাল থেকেও অনেক হাতি এখানে হাজির হয়। তারা রামনগর, করবেট, কোশী নদী হয়ে ১২১ নম্বর জাতীয় সড়ক হয়ে ৩টি প্রধান করিডর হয়ে ঢোকে। এই করিডর তাদের বহুদিনের। কিন্তু শেষ কয়েক বছরে হাতিদের এই যাতায়াতের পথে ক্রমশ জনবসতি ঘন হয়েছে। হাতির পাল নিজের রুট ধরে এলেও তারা আশপাশে ক্রমশ জনবসতি দেখতে পাচ্ছে। যা তাদের বিরক্ত করছে। ফলে মাঝেমধ্যেই জনবসতিতে হানা দিচ্ছে হাতির পাল।
এই অবস্থায় তাদের তাড়াতে কয়েক বছর হল এক অভিনব পন্থা নিয়েছেন এখানকার মানুষজন। তাঁরা লঙ্কা গুঁড়োর প্যাকেট রেডি করে রাখছেন। হাতির পাল এলেই তাদের দিকে করে ছুঁড়ে দিচ্ছেন সেই প্যাকেটবন্দি লঙ্কা গুঁড়ো। লঙ্কা গুঁড়ো বাতাসে মিশে হাতির পালের ওপর গিয়ে পড়ছে। তারা দ্রুত সেখান থেকে পালাচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি লঙ্কা গুঁড়ো ছুঁড়ে হাতি তাড়ালে হাতির পাল সামনের এক সপ্তাহের মধ্যে এ মুখো হয়না। হাতিদের কৌশলে লঙ্কা গুঁড়ো খাইয়ে দেওয়ার পন্থাও মাঝেমধ্যে নেন গ্রামবাসীরা।
এই আচরণের বিরুদ্ধে নয়ডার একটি সংস্থা একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে। সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট সাফ জানিয়েছে কোনওভাবেই আর হাতি তাড়াতে লঙ্কা গুঁড়ো ব্যবহার করা যাবে না। এদিকে হাতি বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, একটি হাতির একদিনে ২২৫ লিটার জল লাগে। তাই তারা নদীর ধারে পৌঁছনোর চেষ্টা করে। জল পানের জন্য তারা সাধারণত রাতটা বেছে নেয়। তাদের ধারণা রাতের অন্ধকারে নদীর ধারে পৌঁছলে তাদের কেউ জ্বালাতন করবে না। কিন্তু হাতিদের করিডরের আশপাশে জনবসতি হয়ে যাওয়ায় সেখানে কলরব হচ্ছে। অনুষ্ঠান হচ্ছে। উৎসব হচ্ছে। প্রচুর আলো জ্বলছে। সবই হাতিদের নিশ্চিন্ত করিডরকে রাতেও শান্তির থাকতে দিচ্ছেনা। এটাও দেখা উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা