মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে যে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি-শিবসেনা জোট ক্ষমতায় আসবে বলে পূর্বাভাস মিলছিল তা কিন্তু মিলল না। যদিও ফের একবার বিজেপি সরকারই গঠন হতে চলেছে সেখানে। মহারাষ্ট্রে মোট আসন সংখ্যা ২৮৮টি। এবার ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরের দাবি ছিল তারা ২৪০টি আসন জিতে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে। তা কিন্তু বাস্তবে ঘটল না। সরকার গড়ার জন্য ম্যাজিক ফিগার ১৪৫ পার করতে সক্ষম হলেও খুব বেশি এগোতে পারেনি বিজেপি শিবসেনা জোট। বরং গতবারে জেতা আসন বেশ কয়েকটি হারাতে হয়েছে তাদের। তারমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পঙ্কজা মুণ্ডের হার। বিজেপির এই হেভিওয়েট মহিলা প্রার্থী ছিলেন মন্ত্রী। তাঁর জন্য এবার তাঁর কেন্দ্রে প্রচার করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। তাঁকে হারতে হয়েছে শরদ পাওয়ারের এনসিপি প্রার্থী ধনঞ্জয় মুণ্ডের কাছে।
মহারাষ্ট্রে কপালে পুরু ভাঁজ নিয়ে যখন ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে বিজেপি-শিবসেনা তখন কিন্তু বিরোধী শিবিরে হেরেও খুশির হাওয়া। এবার নির্বাচনে কংগ্রেস ও এনসিপি জোট বেঁধে মহারাষ্ট্রে লড়াই করে। সঙ্গে ছিল রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা। রাজ ঠাকরে মাত্র ১টি আসনে জয় পেলেও কংগ্রেস-এনসিপি জোট কিন্তু তাদের আসন বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। বেশ কিছু আসন বাড়িয়েছে তারা। ফলে লোকসভার পর প্রায় হাল ছেড়ে দেওয়া কংগ্রেসে আচমকাই একটা খুশির হাওয়া ছড়িয়েছে।
এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার আবার জানিয়েছেন জনগণ চাইছেন তাঁরা বিরোধী আসনে বসুন। জনগণের আদেশ শিরোধার্য। তাই তাঁরা বিরোধী আসনেই বসবেন। এদিকে বিজেপি শিবসেনা যতই জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন লড়ুক না কেন, তাদের মধ্যে একটা ঠান্ডা লড়াই রয়েছে। ইতিমধ্যেই তার আঁচও পাওয়া গেছে। শিবসেনা স্পষ্ট জানিয়েছে বিজেপিকে ৫০-৫০ ক্ষমতা বিভাজন করতে হবে। অর্থাৎ শিবসেনার সঙ্গে সরকার গড়তে হলে বিজেপির ৫০ শতাংশ মন্ত্রী ও শিবসেনার ৫০ শতাংশ মন্ত্রী ফর্মুলায় বিজেপিকে রাজি হতে হবে। এই পরিস্থিতিতে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে শিবসেনা যোগাযোগ করে সরকার গড়ার চেষ্টা করতে পারে বলে মনে করছিলেন অনেকে। সে প্রশ্নও করা হয় শরদ পাওয়ারকে। কিন্তু এনসিপি নেতা সাফ জানিয়ে দেন তাঁরা বিরোধী আসনে বসবেন, কিন্তু শিবসেনার সঙ্গে কোনও সমঝোতায় যাওয়ার প্রশ্নই উঠছে না। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা