National

হরিয়ানায় বিজেপির খারাপ ফল, খট্টরকে তলব করলেন ক্ষুব্ধ অমিত শাহ

হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি শাসিত এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর জানান গতবারের চেয়েও ভাল ফল করবে বিজেপি। এবার তারা ৯০ আসনের বিধানসভায় ৭৫টি আসন দখল করবে। ফলে বিরোধীদের জন্য আর কিছু পরেই রইল না। ১৫টি আসন নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে হবে সব বিরোধী দলকে। এমনই এক ঝোড়ো জয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন হরিয়ানার বিজেপি প্রধান সুভাষ বারালা। বিজেপির ঝোড়ো জয়েরই ইঙ্গিত ছিল এক্সিট পোলগুলিতেও। হয়তো এখানে গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল একটা বড় প্রভাব ফেলেছিল। কিন্তু মানুষ অন্য কিছুই ঠিক করে রেখেছিলেন। আর তা ভোট বাক্সে পরিলক্ষিতও হয়। হরিয়ানায় এবার বেশি ভোটও পড়েনি। আর যেটুকু মানুষ ভোট দিয়েছেন তাতে বিজেপি বিরোধী হাওয়া স্পষ্ট।

হরিয়ানায় বিজেপি একা সরকার গড়ার অবস্থায় নেই। বরং এই রাজ্যে এবার ভেল্কি দেখিয়েছে কংগ্রেস ও জননায়ক জনতা পার্টি। কংগ্রেস যেমন কিছু আসন বেশি জিতে নিয়েছে, তেমনই চমকে দিয়েছে জেজেপি। দুষ্মন্ত চৌটালার জেজেপি জিতে নিয়েছে ১০টি আসন। জেজেপির এই ১০টি আসনই লাভ। আর তারাই যে কিং মেকার হতে পারে হরিয়ানায় তাও পরিস্কার। অন্যদিকে বিজেপির আসন কমেছে। বিজেপির বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও হেরেছেন। হেরেছেন বিজেপির রাজ্য প্রধান সুভাষ বারালা। সরকার গড়ার ম্যাজিক ফিগার হরিয়ানায় ৪৬টি আসন। বিজেপিকে সরকার গড়তে যেমন অন্য কারও সঙ্গে জোট বাঁধতে হবে তেমনই আবার কংগ্রেসকে সরকার গড়তে গেলেও জেজেপি ছাড়াও অন্য দলের সাহায্য নিতে হবে। এদিকে হরিয়ানায় আবার শোচনীয় হার হেরেছে আইএনএলডি-আকালি জোট। তাদের হাতে থাকা প্রায় সব আসনই হারিয়েছে তারা।


লোকসভা ভোটে শোচনীয় পরাজয়ের পর মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা, এই ২ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে সেভাবে উঠে পড়ে লড়তে দেখা যায়নি। প্রচারের ময়দানে তারা বিজেপির থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। কংগ্রেস যেখানে প্রায় হাল ছাড়া একটা মানসিকতা দেখাচ্ছিল, সেখানেই আবার বিজেপির অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস পরিলক্ষিত হচ্ছিল। এমনকি সংবাদমাধ্যমগুলিও বিজেপির ঝোড়ো জয়ের সম্ভাবনা তুলে ধরছিল। তবে কংগ্রেস হরিয়ানায় তাদের বর্ষীয়ান নেতা ভূপীন্দর সিং হুডা-র ওপর ভরসা রেখেছিল। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হুডার রাজনৈতিক বুদ্ধি কংগ্রেসের ভাল ফলে অনেকটা কাজ করেছে। তিনি এদিন জানিয়েছেন বিজেপিকে সমর্থন দিয়ে অন্য কোনও দল যেন ভুল না করে। বরং কংগ্রেস সহ অন্য বিরোধী দলগুলিকে একজোট হয়ে সরকার গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

মহারাষ্ট্রে জিতলেও বিজেপির অন্দরমহল কিন্তু এই জয়ে খুশি নয়। তাও মহারাষ্ট্র হাতে থেকেছে। ম্যাজিক ফিগার হয়ে গেছে। কিন্তু হরিয়ানা নিয়ে প্রবল ক্ষোভ রয়েছে বিজেপির। হরিয়ানায় এমন ভয়ংকর ফলের জন্য বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এদিন দুপুরেই সব কাজ ফেলে তলব করেন হরিয়ানার বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরকে। অমিত শাহ যে হরিয়ানার ফলে চূড়ান্ত অখুশি তা মেনে নিচ্ছে রাজনৈতিক মহল। এদিকে এরমধ্যেই আরজেডি আবার খোঁচা দিয়ে জানিয়েছে ধনতেরাসের দিন যখন গোটা দেশ সোনা কিনবে, তখন অমিত শাহ বিধায়ক কিনবেন। তবে রাজনৈতিক মহল একবাক্যে মেনে নিচ্ছে যে বিজেপির লোকসভা নির্বাচনে এমন তুফানি জয়ের পর মাত্র এই কমাসের ব্যবধানে ২ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে এমন ফল কিন্তু গেরুয়া শিবিরের স্বস্তি অনেকটাই কেড়ে নিল। অন্যদিকে লোকসভা নির্বাচনের পর ঝিমিয়ে পড়া কংগ্রেসকে ফের গা ঝাড়া দিয়ে উঠে লড়াইয়ের ময়দানে নামার ভরপুর অক্সিজেন দিল। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button