চিতা তখন জ্বলছে। তাতে শোয়ানো রয়েছে এক তরুণী গৃহবধূর দেহ। তাঁরই সৎকার হচ্ছে। ঠিক তখনই সেখানে হাজির হন তরুণীর বাবা ও ভাই। সঙ্গে পুলিশ। আসে দমকলও। দ্রুত জ্বলতে থাকা চিতার আগুন নিভিয়ে ফেলে দমকল। তারপর পোড়া কাঠ সরিয়ে প্রায় আধপোড়া দেহ চিতা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ময়নাতদন্তে। ওই তরুণীর বাবা ও ভাইয়ের অভিযোগক্রমেই দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
২০১৭ সালে পুনমের সঙ্গে পুষ্পেন্দ্র-র বিয়ে হয়। বিয়ের পরপর সব ঠিকই ছিল। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই পুনমের বোনের সঙ্গে পুষ্পেন্দ্রর একটি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়। একথা পুনম জানতে পারেন। স্বামীর সঙ্গে এই নিয়ে তাঁর ঝগড়া হত। পুনমের বাবার দাবি, তাঁর মেয়ের ওপর অকথ্য অত্যাচার করত পুষ্পেন্দ্র। যাতে তাঁর মেয়ের ওপর অত্যাচার না হয় সেজন্য পুষ্পেন্দ্রকে চাহিদামত টাকাও দিতেন তিনি। কিন্তু তাতেও অত্যাচার কমেনি।
গত রবিবার পুনমের বাবা তাঁর এক পরিচিতের কাছে খবর পান পুনম মারা গেছেন। দ্রুত ছেলেকে সঙ্গে করে পুনমের শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছন তিনি। সেখানে গিয়ে দেখেন তাঁর মেয়ে একটি খাটিয়ায় নিথর হয়ে শুয়ে আছে। শ্বশুরবাড়ি তাঁদের জানায় পুনম আত্মহত্যা করেছেন। পুনমের বাবা ও ভাইকে মারধরও শুরু করে তারা। তারপর তাঁদের একটি ঘরে বন্ধ করে তড়িঘড়ি দেহ নিয়ে চলে যায় শ্মশানে। সেখানে যত দ্রুত সম্ভব চিতা সাজিয়ে পুনমের দেহ সৎকারের চেষ্টা করে তারা। আগুনও দেওয়া হয় চিতায়। চিতা দাউদাউ করে জ্বলতেও শুরু করে।
ঘরে বন্ধ থাকা পুনমের বাবা ও ভাই কোনওক্রমে তারমধ্যেই নিজেদের মুক্ত করতে সমর্থ হন। ঘর থেকে বেরিয়ে তাঁরা পুলিশকে খবর দিয়ে সোজা হাজির হন শ্মশানঘাটে। সেখানে তখন পুনমের দেহ জ্বলছে। কিন্তু সঠিক সময়ে পুলিশ ও দমকল হাজির হয়। পুনমের বাবা ও ভাইয়ের দাবি কোনও আত্মহত্যা নয়, পুনমকে হত্যা করেছে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের চোলা চৌকি গ্রামে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা