১৭ বছরের বিবাহিত জীবন। ১ ছেলে ও ৩ মেয়েকে নিয়ে সংসার দম্পতির। স্বামী নরেশ একজন টিভি মেকানিক। টিভি খারাপ হলে সারায়। এটাই তার রুজি। সেই রোজগারেই সংসার চলত তাদের। সব ঠিকঠাকই ছিল। বাধ সাধছিল কেবল নরেশের মদের প্রতি আসক্তি। মদ্যপানের নেশার জন্য স্ত্রীয়ের সঙ্গে তার খটাখটি লেগেই থাকত। লোকজনও পারিবারিক ঝগড়া বলে বিশেষ নাক গলাতেন না। পুলিশ জানাচ্ছে, গত রবিবারও মদ্যপান করছিল নরেশ। তাতে বাধা দেন স্ত্রী। কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তারপরই রেগে হাতের কাছে থাকা একটি ছুটি দিয়ে স্ত্রীর মুণ্ড দেহ থেকে আলাদা করে দেয় নরেশ।
ঘটনাটি ঘটে অনেক রাতে। তখন ছেলে-মেয়েরা ঘুমোচ্ছিল। স্ত্রীর কাটা মুণ্ড নরেশ প্রথমে একটি টিনের বড় কৌটোয় পুরে ফেলে। তারপর যে ঘরে সে স্ত্রীকে হত্যা করেছে সেই ঘরে স্ত্রীর মুণ্ডহীন দেহ মেঝেতে ফেলে রেখেই দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর বহাল তবিয়তে রাত কাটায় সেখানে। এদিকে সকালে ঘুম থেকে উঠে ছেলেমেয়েরা মাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজ শুরু করে। বড় মেয়ে অবশেষে বাবা-মায়ের ঘরে উঁকি দিয়ে দেখে মায়ের দেহ পড়ে আছে। ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
সে তখনই আত্মীয়দের খবর দেয়। আত্মীয়রা খবর দেন পুলিশে। এদিকে নরেশ স্ত্রীর ছড়িয়ে পড়া রক্ত কিছুটা পরিস্কার করার চেষ্টা করে। ছুরির রক্ত ধুয়ে ফেলে। তারপর যে টিনের কৌটোয় স্ত্রীর কাটা মুণ্ড রেখেছিল তা নিয়ে সোজা হাজির হয় পুলিশ স্টেশনে। পুলিশ খবর পেয়ে যখন তাকে খুঁজতে বার হতে যাচ্ছে তখন নিজেই সেখানে হাজির হয় নরেশ। পুলিশের সামনে কৌটো খুলে কাটা মুণ্ড বার করে সে।
প্রাথমিক চমক কাটিয়ে পুলিশ এরপর নরেশকে গ্রেফতার করে। নরেশ পুলিশকে জানিয়েছে সে স্ত্রীকে হত্যা করলেও মদ্যপান করছিল না। বরং স্ত্রীকে হত্যার অন্য কারণ দেখিয়েছে সে। তার দাবি স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আগ্রার হরি পর্বত থানার অন্তর্গত এতমদ্দৌলা এলাকায়। এই ঘটনায় সবচেয়ে বড় মানসিক আঘাত পেয়েছে ৩ মেয়ে ও ১ ছেলে। আপাতত আত্মীয়দের জিম্মায় রয়েছে তারা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা