১৯৯৭ সালের পর এমন বিধ্বংসী আগুন দেখেনি দিল্লি। রবিবার ভোর তখন সাড়ে ৪টে থেকে ৫টার মধ্যে একটা সময়। শীতের দিল্লি তখন লেপ কম্বলের তলায় গভীর ঘুমে মগ্ন। এই সময় পশ্চিম দিল্লির রানি ঝাঁসি রোডের জনবহুল এলাকায় অবস্থিত একটি ব্যাগের কারখানায় আগুন লেগে যায়। আগুন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিশাল আকার নেয়। ব্যাগ ও ব্যাগ তৈরির সরঞ্জাম মজুত ছিল কারখানায়। ফলে দাহ্য বস্তুর অভাব ছিলনা। দমকল জানিয়েছে তারা ৫টা ২২ মিনিটে খবর পায়। তারপরই সেখানে একে একে হাজির হয় দমকলের ২৫টি ইঞ্জিন।
ব্যাগ কারখানায় আগুন লাগলেও ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় পাশের ২টি বাড়িতেও নিমেষে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে কারখানার মধ্যে তখন ঘুমিয়ে ছিলেন কারখানার শ্রমিকরা। তাঁরা আগুনের গ্রাসে চলে আসেন। দমকলবাহিনী হাজির হয়ে আগুন নেভানোর আপ্রাণ চেষ্টা শুরুর পাশাপাশি একে একে শ্রমিকদের বার করে আনে। ততক্ষণে অবশ্য অনেক শ্রমিকই অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন বা প্রবল ধোঁয়ায় তাঁদের দম বন্ধ হয়ে গেছে। দিল্লির ২টি হাসপাতালে পাঠানো হয় তাঁদের। সেখানে পরে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করছে পুলিশ।
আগুন লাগার কারণ এখনও অজানা। তবে পুলিশ জানিয়েছে কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘিঞ্জি এলাকায় কারখানা চালানো এবং কারখানা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় নিয়ম না মানার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে ছুটির ভোরেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বহু মানুষ হাজির হন ঘটনাস্থলে। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আগুনে এতজন মানুষের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লির উপহার সিনেমা হলে ১৯৯৭ সালের ১৩ জুন আগুন লাগে। মৃত্যু হয় ৫৯ জন মানুষের। তারপর এদিনের এই অগ্নিকাণ্ডই দিল্লির বুকে সবচেয়ে বড় আগুন লাগার ঘটনা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা