আরব সাগরের ধারে পড়ে আছে একটা সুটকেস। আর সুটকেস খুলতেই তার মধ্যে পাওয়া গেল মানুষের শরীরের কাটা অংশ। যা একটা মেরুন সোয়েটারে মোড়ানো ছিল। এটাই চরম ভুল করে ফেলেছিল অপরাধীরা। সোয়াটারই চরম ক্লু হিসাবে সামনে এল। আর সেই সোয়েটারের হাত ধরেই ধাপে ধাপে অপরাধীদের নাগাল পেয়ে গেল পুলিশ। বাস্তব জীবনের এই রহস্যভেদ ফেলুদা, ব্যোমকেশকে অনায়াসে টক্কর দিতে পারে। পুলিশের হাতে ছিল ওই একটি মাত্র সম্বল সোয়েটার। ওটাকেই দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে দিল পুলিশ।
পুলিশ ওই সোয়াটার পরীক্ষা করে প্রথমে এক দরজি দোকানের নাম পায়। কুরলার ওই দরজির কাছে পৌঁছয় পুলিশ। সেখান থেকে ওই সোয়েটার কে কবে কিনেছিল তার বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করে। সেই তথ্য নিয়ে পুলিশ হাজির হয় মুম্বইয়ের সান্তাক্রুজ ইস্টের দ্বারকা কুঞ্জ নামে বাড়িতে। এখানেই থাকতেন বেনেট রেবেলো নামে এক ব্যক্তি। বিপত্নীক রেবেলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিটার বাজিয়ে রোজগার করতেন। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে তাঁর কোনও খোঁজ ছিলনা। স্থানীয়রা জানান রেবেলো কয়েক বছর আগে একটি মেয়েকে দত্তক নেন।
পুলিশ পৌঁছয় রেবেলোর দত্তক কন্যা ১৯ বছরের আরাধ্যা পাটিলের কাছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে বাড়ি পরীক্ষার পর পুলিশ বুঝতে পারে ওই কন্যাই রেবেলোকে হত্যা করেছে। পুলিশের কাছে আরাধ্যা স্বীকার করে যে তার সঙ্গে ১৬ বছরের এক কিশোরের প্রেমের সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নিচ্ছিলেন না রেবেলো। আরাধ্যার আরও অভিযোগ রেবেলো তাকে যৌন হেনস্তাও করতেন। অসহ্য হয়ে সে তার কিশোর প্রেমিককে নিয়ে রেবেলোকে হত্যা করে। তারপর ৩ দিন ধরে একটু একটু করে রেবেলোর দেহ টুকরো করে। তারপর কিছু দেহাংশ ওই সুটকেসে পুরে মিঠি নদীর জলে ভাসিয়ে দেয়। মিঠি নদীতে ভেসে ওই সুটকেস হাজির হয় আরব সাগরে। সেখান থেকে সুটকেসটি উদ্ধার করে পুলিশ। রেবেলোর দেহের বাকি অংশ খুঁজছে পুলিশ। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা