স্বামী মারা গেছেন অনেক বছর হল। তখন তাঁর বয়স সবে ৩০ বছর। সময়টা ২০১২ সাল। স্বামীর মৃত্যুর পর নতুন করে বিয়ে না করলেও নজর রাখতেন পাত্র-পাত্রী পাতায়। সেখানেই এক যুবকের খোঁজ পান তিনি। ওই যুবকের সঙ্গে তাঁর ফোনেই আলাপ হয়। তারপর ক্রমে ফোনেই ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। নিজের শহর চেন্নাই ছেড়ে ওই যুবকের সঙ্গে থাকতে হায়দরাবাদ চলে আসেন এস লোকেশ্বরী। প্রবীণ কুমার নামে সোনার দোকানে কর্মরত ওই যুবকের সঙ্গে একসঙ্গেই থাকতে শুরু করেন তিনি। তাঁদের মধ্যে লিভ ইন সম্পর্ক তৈরি হয়। সেভাবেই কাটছিল দিনগুলো।
লোকেশ্বরী এরপর কাজ করতে চান। প্রবীণ কুমার তখন তাঁরই দোকানে লোকেশ্বরীর কাজের বন্দোবস্ত করে দেন। সহবাসে যুক্ত প্রবীণ ও লোকেশ্বরী এক দোকানেই কাজ করতেন। একসঙ্গেই যেতেন আসতেন, বাড়িতে থাকতেন। ২০১৪ সালে লোকেশ্বরী ওই সোনার দোকান থেকে সোনার গয়না চুরির অভিযোগে জড়ান। তখন প্রবীণ কুমার নিজেই পুলিশকে লোকেশ্বরীর কাণ্ডের কথা জানান। সোনা চুরির অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
সোনা চুরির সাজা ভোগ করার পর জেল থেকে ছাড়া পান লোকেশ্বরী। ফিরে আসেন প্রবীণ কুমারের কাছে। তাঁর এমন কাজের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নেন। প্রবীণ কুমারও তাঁকে জানিয়ে দেন আর সহবাস নয়। তিনি এতদিন যে লোকেশ্বরীর সঙ্গে সহবাস করেছেন তার ক্ষতিপূরণ হিসাবে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা তিনি দিয়ে দেবেন। লোকেশ্বরী চেন্নাই ফিরে যান। মায়ের কাছে থাকতে শুরু করেন। এরপর টাকা নিয়ে হালে বন্ধু কানান-এর সঙ্গে ফের হায়দরাবাদ আসেন ৩৭ বছরের লোকেশ্বরী। প্রবীণ কুমারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে টাকা চান। অভিযোগ কয়েকদিন ফোন ধরলেও তারপর ফোন সুইচ অফ করে দেন প্রবীণ।
টাকা না পেয়ে, প্রবীণকেও ফোনে না পেয়ে অবশেষে হায়দরাবাদের একটি পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করেন লোকেশ্বরী। লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর যখন লোকেশ্বরীর বন্ধু পুলিশের সঙ্গে কথা বলছেন, তখন সেখান থেকে উঠে আসেন লোকেশ্বরী। তারপর পুলিশ স্টেশনের সামনেই গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পুলিশ কর্মীরাই তাঁর আগুন কোনওক্রমে নিভিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে প্রবীণ কুমারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা