সংখ্যাটা ১০ হাজার ৩২৩। সকলেই সরকারি শিক্ষক। আদালতের একটি রায়ে এতজন সরকারি শিক্ষক চাকরি হারাতে চলেছেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই এভাবে সরকারি চাকরি চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন। রবিবার তাঁরা অবস্থান ধর্মঘটে বসেছেন। দাবি করেছেন তাঁদের জন্য সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তাঁদের আরও দাবি চাকরি হারানোর আতঙ্ক থেকে ৫০ জন শিক্ষক আত্মহত্যা করেছেন। তাঁরা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ওই ৫০ জন শিক্ষকের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে বলেও দাবি করেছেন শিক্ষকরা।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১০ সাল থেকে। সেই সময় ত্রিপুরায় ক্ষমতায় ছিল সিপিএম সরকার। সে সময় খেপে খেপে অনেকে সরকারি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পান। এই চাকরি প্রদানে অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি করে বেশ কয়েকজন ত্রিপুরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ত্রিপুরা হাইকোর্ট ২০১৪ সালে রায় দেয় যে ১০ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষকের চাকরি পাওয়ার পদ্ধতি সঠিক নয়। ফলে তাঁদের চাকরি আর থাকবে না। নিয়ম মেনে তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়নি। রায় চ্যালেঞ্জ হয় সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ ওই রায়কেই বহাল রাখে। এই অবস্থায় চাকরি যাওয়া নিশ্চিত হয়ে যায় ওই ১০ হাজার ৩২৩ শিক্ষকের। তখন ক্ষমতাসীন মানিক সরকারের সরকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান ওই শিক্ষকদের যেন কিছুদিন আরও চাকরিতে রাখার অনুমতি প্রদান করা হয়। সেই মত সুপ্রিম কোর্ট ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত তাঁদের চাকরিতে বহাল রাখায় অনুমতি দেয়।
এর মধ্যে ত্রিপুরায় সরকার বদলায়। সিপিএম হেরে যায় ভোটে। ক্ষমতায় আসে বিজেপি সরকার। বিজেপি সরকারের তরফে ফের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয় যে এই শিক্ষকদের চাকরি যেন আরও কিছুদিন বর্ধিত করা হয়। সেইমত সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এঁদের চাকরি থাকবে। তারপর আর তাঁদের চাকরি থাকবেনা। এই অবস্থায় রবিবার ত্রিপুরার রাজধানী শহর আগরতলায় অবস্থানে বসেছেন এই চাকরি হারাতে চলা শিক্ষকরা। তাঁরা সরকারের কাছে দাবি করেছেন তাঁদের সকলকে হয় সরকারি স্কুলেই নতুন করে বহাল করা হোক। অথবা তাঁদের অন্য চাকরি দেওয়া হোক। তবে শিক্ষকতা চালিয়ে যেতেই আগ্রহী তাঁরা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা