ভিন রাজ্যে কর্মরত বা বাড়ি থেকে অনেক দূরে কর্মরত শ্রমিকরা অনেকে লকডাউনে গাড়ি না পেয়ে বাড়ির পথে হাঁটা শুরু করে দেন। শয়ে শয়ে কিলোমিটার প্রবল গরম উপেক্ষা করে তাঁরা বাড়ির টানে হেঁটেছেন। এই করতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এমনই এক দম্পতি কাজ করতেন নয়ডায়। বাড়ি উত্তরপ্রদেশের জালাউন জেলার অন্তা গ্রামে। তাঁরা তাঁদের পুরো মজুরি পাওয়ার পর গাড়ি না পেয়ে লকডাউনের মধ্যেই হেঁটে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।
হেঁটে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত অনেক শ্রমিকই নিয়েছেন। কিন্তু এই দম্পতির ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল প্রবল কঠিন কাজ। কারণ ২৫ বছরের অঞ্জুদেবী নামে ওই মহিলা ৮ মাসের সন্তানসম্ভবা। ওই অবস্থায় সামান্য দূর হাঁটাই প্রায় অসম্ভব হয়। তো বাড়ি অব্ধি হাঁটা তো দুরস্ত। কিন্তু তাঁরা সেই কঠিন সিদ্ধান্তই গ্রহণ করেন। রুটি আর কিছু তরকারি বানিয়ে ব্যাগে পুরে স্বামী অশোকের হাত ধরে অনন্ত পথ হাঁটা শুরু করেন অঞ্জুদেবী।
৮ মাসের এক সন্তানসম্ভবা হেঁটে চলেছেন রাস্তা ধরে। কিন্তু তারপরও তাঁরা একটা কোনও গাড়ি পাননি যাতে করে তাঁরা বাড়ি পৌঁছতে পারেন। ২ দিন ২ রাত্রি হাঁটেন তাঁরা। মাঝে কিছু জায়গায় তাঁদের রাস্তায় কিছু খাবার দেওয়া হয়েছে বলে জানান ওই দম্পতি। অবশেষে কিন্তু তাঁরা ২০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গ্রামে পৌঁছন। ৮ মাসের সন্তানসম্ভবা অঞ্জুদেবী একাজ কি করে পারলেন সেটাই অনেককে অবাক করছে।
গ্রামেও পৌঁছনোর পর তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা হয় স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এরপর অন্য জায়গা থেকে আসায় তাঁদের ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু গ্রামে ফেরার আনন্দই আলাদা। ওই দম্পতি জানিয়েছেন, এটাই তাঁদের কাছে অনেক পাওয়া যে সুস্থ অবস্থায় তাঁরা বাড়ি ফিরতে পেরেছেন। আপাতত সুস্থ আছেন অঞ্জুদেবীও। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা