কড়া জেলাশাসককে এভাবে পাশে পেয়ে ধন্যবাদের ভাষা হারালেন রিকশাচালক
মাঝেমধ্যেই বেরিয়ে পড়েন জেলার বাস্তব পরিস্থিতি দেখতে। আর সে সময় তাঁর নজরে যদি কেউ এমন পড়েন যিনি খুব দরকারি কারণ ছাড়া রাস্তায়। তাহলে তাঁর আর নিস্তার নেই।
তাঁকে সবাই জানেন কড়া মেজাজের জেলাশাসক হিসাবেই। লকডাউন চলাকালীন তাঁর ভয়ে তটস্থ গোটা জেলা। লকডাউনের সময় অকারণে রাস্তায় কাউকে দেখলেই সোজা জেলে পোরা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
নিজে মাঝেমধ্যেই বেরিয়ে পড়েন জেলার বাস্তব পরিস্থিতি দেখতে। আর সে সময় তাঁর নজরে যদি কেউ এমন পড়েন যিনি খুব দরকারি কারণ ছাড়া রাস্তায়। তাহলে তাঁর আর নিস্তার নেই। এমনই এক টহলদারিতে গত শুক্রবার বার হয়েছিলেন তিনি।
রাস্তায় তাঁর নজরে পড়েন এক ব্যক্তি। জেলাশাসক আঞ্জনেয় কুমার সিং ওই ব্যক্তিকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন কেন তিনি এভাবে লকডাউনেও রাস্তায় ঘুরছেন? তিনি এও বলেন এভাবে ঘোরা মানে কিন্তু সোজা জেল। জেলাশাসকের জিজ্ঞাসার উত্তর দেন ওই ব্যক্তি।
ওই ব্যক্তি জানান তিনি পেশায় একজন রিকশাচালক। অনেক দিন ধরে রোজগার নেই। বাড়িতে ওষুধ দরকার। খাবার নেই। চরম পরিস্থিতিতে ওষুধটুকু আনতে তাঁর পরিচিত এক ব্যক্তির কাছে তিনি নিজের মোবাইল জমা রেখে ১৫০ টাকা নিয়েছেন। সেই টাকা নিয়ে ওষুধের খোঁজে বেরিয়েছেন রাস্তায়।
রিকশাচালকের সব কথা শোনার পর জেলাশাসক নিজে তাঁকে নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে দেন। তাঁর হাতে ১৫০ টাকাও দিয়ে দেন, যাতে তিনি তাঁর মোবাইলটা ছাড়িয়ে আনতে পারেন। এটাও জানান মোবাইল ফেরত পেয়ে যেন তাঁকে ফোন করেন ওই রিকশাচালক।
ওই রিকশাচালক তখন জেলাশাসকের এমন ব্যবহারে এতটাই আপ্লুত যে তিনি কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। ধন্যবাদ জানাতেও ভুলে গেছিলেন তিনি। জেলাশাসক কিন্তু এরপর ওই রিকশাচালকের জন্য প্রয়োজনীয় রেশনের ব্যবস্থা করে দেন। নিজের ফোন নম্বর দিয়ে জানিয়ে দেন কোনও প্রয়োজন পড়লে ওই ব্যক্তি যেন তাঁকে জানান।
উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলার জেলাশাসকের এমন কীর্তিতে তাঁকে ধন্য ধন্য করছেন সকলে। জেলাশাসক কিন্তু জানিয়েছেন, তাঁর জেলার মানুষের সেবা করতেই তাঁকে ওই পদে বসানো হয়েছে। কোনও মানুষ সমস্যায় থাকলে তাঁকে যেন দ্রুত সাহায্য করা হয়, তেমন নির্দেশও তিনি তাঁর আধিকারিকদের দিয়েছেন। সেইসঙ্গে এটাও নির্দেশ দিয়েছেন কাউকে রাস্তায় এমনি ঘুরতে দেখলে যেন তাঁকে জেলে পাঠানো হয়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা