১ হাজার ১০০ কিলোমিটার অতিক্রম করে মায়ের শেষকৃত্যে যোগ দিলেন জওয়ান
দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন। আর তার মধ্যেই আসে সেই খবর। মা আর নেই। ৩০ বছরের সন্তোষ কথা বলেন দাদা ও বোনের সঙ্গে।
২০০৯ সালে যোগ দেন ছত্তিসগড় আর্মড পুলিশ-এ। দাদা ও বিবাহিত বোন থাকেন মুম্বইতে। বাড়িতে বাবা, মা, স্ত্রী ও সন্তান। আর তিনি নিজে ছত্তিসগড়ের নকশাল প্রভাবিত বিজাপুরে পোস্টেড।
দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন। আর তার মধ্যেই আসে সেই খবর। মা আর নেই। ৩০ বছরের সন্তোষ যাদব কথা বলেন দাদা ও বোনের সঙ্গে। লকডাউনে তাঁরা মায়ের মৃত্যুর পরও উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের চুনারের শিখর গ্রাম-এ তাঁদের বাড়িতে ফেরার পরিস্থিতিতে নেই। কোনও সুযোগ নেই সেখানে পৌঁছনোর। এরপরই সন্তোষ স্থির করেন যাই হোক, তিনি তাঁর বাড়িতে ফিরবেন। এই সময় তাঁর বাবার পাশে থাকা দরকার। সেইমত তিনি বেরিয়ে পড়েন।
বেরিয়ে পড়লেই তো হল না। বিজাপুর থেকে চুনার ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার দূরে। এতটা পথ কীভাবে পৌঁছবেন তিনি? সন্তোষ জানান, তিনি চাইছিলেন কোনওভাবে রায়পুর পৌঁছতে। তারপর সেখান থেকে তিনি নিশ্চিত ছিলেন কিছু একটা ব্যবস্থা হয়েই যাবে।
বিজাপুর থেকে একটা ধান নিয়ে যাওয়া গাড়িতে চড়ে তিনি পৌঁছন জগদলপুর। সেখান থেকে একটি মিনি ট্রাক ধরে কোন্দাগাঁও। কারণ লকডাউনে রাস্তায় কেবল রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ও খাদ্যশস্য পরিবহণের যান। এখানে পুলিশ আটকায়। তবে তিনি নিজের পরিস্থিতি বুঝিয়ে বলে এক পুলিশ কর্মীর সাহায্যে একটি মেশিন ভর্তি ট্রাকে চড়ে পৌঁছন রায়পুর।
রায়পুর থেকে একটি মালগাড়িতে চড়েন। এক্ষেত্রে তাঁকে সাহায্য করেন তাঁর এক বন্ধু, যিনি আরপিএফ-এ কর্মরত। রায়পুর থেকে চুনার পৌঁছতে সন্তোষ ৮টি মালগাড়ি পরিবর্তন করেন। সব ক্ষেত্রেই তাঁকে সাহায্য করেন রেলের কর্মীরা, বন্ধুরা। চুনার স্টেশন থেকে ৫ কিলোমিটার হেঁটে পৌঁছন গঙ্গার ধারে। সেখান থেকে নৌকা ধরে গঙ্গা পার করে তারপর পৌঁছন গ্রামে।
৭ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে পৌঁছন ১০ এপ্রিল। সেখানে পৌঁছে পরিবারের এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ান। পাশে দাঁড়ান বাবার। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা