খোলা গেলনা ব্যারিকেড, মাঝরাতে রাস্তাতেই সন্তান প্রসব করলেন মহিলা
প্রসব যন্ত্রণা ওঠে এক মহিলার। মধ্যরাতে ক্রমশ বাড়তে থাকা প্রসব যন্ত্রণা দেখে তাঁর স্বামী ফোন করেন অ্যাম্বুলেন্সে। তারা জানায় অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে পারবেনা।
লকডাউনে রাস্তায় বার হওয়া মানা। অনেক জায়গায় রাস্তা ব্যারিকেড করে আটকে দিয়েছে পুলিশই। কারণ দর্শালে তবেই মিলছে ছাড়। কিন্তু সন্তানসম্ভবা মায়ের প্রসব যন্ত্রণা তো আর লকডাউন মানবে না।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এমনই প্রসব যন্ত্রণা ওঠে এক মহিলার। মধ্যরাতে ক্রমশ বাড়তে থাকা প্রসব যন্ত্রণা দেখে তাঁর স্বামী ফোন করেন অ্যাম্বুলেন্সে। তারা জানায় এখন অ্যাম্বুলেন্স তারা পাঠাতে পারবেনা। কারণ অন্য রোগী নিয়ে গেছে অ্যাম্বুলেন্স। অগত্যা প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা স্ত্রী রেশমাকে নিজের স্কুটিতে বসিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা দেন ভেঙ্কান্না।
মধ্যরাতের সুনসান রাস্তায় একটি মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড দেখে থমকে দাঁড়ান ভেঙ্কান্না। ব্যারিকেড সরানোর জন্য তখন সেখানে কোনও পুলিশ নেই। আবার ব্যারিকেড না সরালে যাওয়াও যাবেনা। অগত্যা স্ত্রীকে স্কুটি থেকে নামিয়ে রাস্তার ধারে বসান ভেঙ্কান্না। তারপর ছোটেন কাছের পুলিশ স্টেশনে।
সেখানে এক কনস্টেবলকে পুরো বিষয়টি জানিয়ে ব্যারিকেড খুলে তাঁদের যাওয়ার বন্দোবস্ত করে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু কনস্টেবল জানিয়ে দেন তিনি যেখানে পোস্ট রয়েছেন সেখান থেকে তিনি চলে যেতে পারবেননা। তবে তিনি পরামর্শ দেন ভেঙ্কান্না যেন নিজেই ব্যারিকেড ফাঁক করে স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়ে যান।
ভেঙ্কান্না এরপর ছুটে আসেন ফের স্ত্রীর কাছে। দেখেন স্ত্রী তখন যন্ত্রণায় আর্তনাদ করছেন। এরপর ভেঙ্কান্না সুনসান পথে দাঁড়িয়েই সাহায্য চেয়ে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু তারমধ্যই রেশমা রাস্তায় শোয়া অবস্থাতেই এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। রেশমার আর্তনাদ ও ভেঙ্কান্নার সাহায্য চেয়ে চিৎকার শুনে আশপাশ থেকে অনেকে ঘুম থেকে উঠে বেরিয়ে আসেন। মহিলারা বেরিয়ে আসেন রেশমাকে সাহায্য করতে। স্থানীয়রা অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করতে থাকেন।
প্রায় যখন ভোর তখন একটি অ্যাম্বুলেন্স সেখানে হাজির হয়। সেই অ্যাম্বুলেন্সে এক স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন। তিনিই প্রথমে মায়ের নাড়ি কেটে শিশুকে আলাদা করেন। তারপর ২ জনকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটে অ্যাম্বুলেন্স। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা মা ও শিশুকে পরীক্ষা করেন। ২ জনকেই আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন ২ জনই বিপদমুক্ত। ভাল আছেন মা। শিশুটিও সুস্থ। ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার সূর্যপেট শহরের কাছে আন্নাদুরাইনগরে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা