ঘুমপাড়ানি গুলিতে ১৫ মিনিটে মৃত বাঘ, তুঙ্গে তরজা
গত শুক্রবার থেকে হামলা চালাচ্ছিল একটা বাঘ। পর পর মানুষ তার হামলার শিকার হচ্ছিলেন। অবশেষে মৃত্যু হল তার।
বন দফতরের আধিকারিকরা প্রথমে কিন্তু বাঘটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি বা ট্র্যাঙ্কুলাইজারে কাবু করতে চাননি। বরং তাঁরা চাইছিলেন বাঘটি ফিরে যাক তার বনে। সেজন্যই তাকে গ্রামের আশপাশ থেকে খেদিয়ে বনে পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছিলেন তাঁরা। সেই চেষ্টা চলে ২ দিন। অবশেষে বাঘটিকে কাবু করতে রবিবার বিকেলে সেই ট্র্যাঙ্কুলাইজারের পথেই হাঁটেন বন বিভাগের আধিকারিকরা। ট্র্যাঙ্কুলাইজারে কাবুও হয় বাঘটি। কিন্তু তার ১৫ মিনিটের মধ্যেই সেটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
ট্র্যাঙ্কুলাইজারে বাঘের মৃত্যু ঘিরে তরজা শুরু হয়ে গেছে। বন দফতরের দাবি, বাঘটির আগে থেকেই দেহে আঘাত ছিল। সেই ঘা থেকেই মৃত্যু হয়েছে তার। অন্যদিকে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ সংগঠনগুলির দাবি কোনও ঘা নয়, ট্র্যাঙ্কুলাইজারের ওভারডোজেই মৃত্যু হয়েছে বাঘটির। বাঘটির ঠিক কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তা তার দেহ পরীক্ষার পরই স্পষ্ট হবে। বাঘটি উত্তরপ্রদেশের পিলিভিট অভয়ারণ্যের ধারে জারি গ্রামে গত শুক্রবার থেকে হামলা চালাচ্ছিল।
বাঘের হামলায় এই এলাকায় গত শুক্রবার থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বাড়ি থেকে বার হওয়া। কৃষিকাজ করতে মাঠে যাওয়া। গত শুক্রবার জমিতে কাজ করতে যাওয়ার জন্য ওই গ্রামেরই বাসিন্দা সম্পর্কে ২ ভাই বার হয়েছিলেন মোটরবাইকে চেপে। যাচ্ছিলেন মাঠের দিকে। ঠিক সেই সময়েই তাঁদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে একটি বাঘ। বাঘের থেকে নিজেদের ছাড়ানোর জন্য বাইকে বসেই লড়তে থাকেন ২ জনে। আঘাতও পান। পরে প্রাণপণ গতিতে বাইক চালিয়ে এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। বাইকের গতির সঙ্গে কিছুটা পাল্লা দিয়ে তারপর হাল ছাড়ে বাঘ।
এই ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই এক গ্রামবাসী সাইকেলে করে সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। এবার বাঘ তাঁকে টার্গেট করে। মোটরবাইকের গতি রয়েছে। কিন্তু সাইকেলের তো সেটা নেই। ফলে দ্রুত ওই ব্যক্তিকে থাবার ঘায়ে আহত করে তাঁর ওপর চড়াও হয় বাঘটি। আর ঠিক তখনই ওই ২ ভাই দূর থেকে বাইকে কর্কশ শব্দ করতে থাকেন। ওই আওয়াজে বিরক্ত হয়ে ওই ব্যক্তিকে আহত করে সেখান থেকে চলে যায় বাঘটি।
৩ জনের ওপর বাঘের হানা হয় জারি গ্রামে। ওই গ্রামের লাগোয়া গ্রাম লালপুর। লালপুর গ্রামের বাসিন্দা ২ ব্যক্তি কাজে যাচ্ছিলেন। এবার তাঁদের ওপর হামলা করে বাঘটি। তাঁদের মাথা ও কাঁধে বাঘের ধারাল নখের আঁচড় পড়ে। গুরুতর জখম ওই ২ ব্যক্তি প্রাণভয়ে আর্ত চিৎকার করতে থাকেন। তাঁদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে বাঘটিকে হঠানোরও চেষ্টা চালাতে থাকেন। বাঘ এরপর তাঁদের ছেড়ে কাছের একটি ঝোপে ঢুকে যায়। এদিকে বাঘের হামলার খবর পৌঁছয় বন দফতরে। দ্রুত বন দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা সেখানে হাজির হন। শুরু হয় বাঘকে খেদিয়ে জঙ্গলে পাঠানোর চেষ্টা। তাতে প্রবল বিরক্ত হয়ে বাঘটি এবার হামলা চালায় বন দফতরের কর্মীদের ওপর। ২ জন বন কর্মী গুরুতর আহত হন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা