হয় মৃত্যু, নয়তো জীবন, কিন্তু হাঁটা থামবে না, জানালেন ঘনশ্যাম
হয় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বেন। আর তা না হলে বেঁচে গেলেন। কিন্তু যাই হোক, তাঁরা হাঁটা থামাবেন না।
দেশে এসি ট্রেন ছুটছে মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছতে। শ্রমিক স্পেশালও ছুটছে। কিন্তু এখনও অনেক এমন সব জায়গায় থাকা পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন যাঁদের কাছে বাড়ি ফেরার একটাই উপায়। পুরো রাস্তাটা হেঁটে চলা। পকেট তাঁদের ফাঁকা। যেটুকু পুঁজি সঞ্চিত ছিল সব এই লকডাউনে খাবার খেতে শেষ হয়ে গেছে। আর কিছু করার নেই। তাই তাঁরা হাঁটা শুরু করেছেন।
৫০ জন শ্রমিকের একটি দলের সদস্য ঘনশ্যাম এমনই জানিয়েছেন। এই ৫০ জন শ্রমিক হেঁটে চলেছেন তাঁদের বাড়ির দিকে। মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা তাঁরা। অনেকেই থাকেন দামো নামে এলাকায়। দিল্লি থেকে হেঁটেই ফিরছেন তাঁরা। ৭০০ কিলোমিটার পথ তাঁরা হেঁটেই ফিরবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন মরিয়া মানুষগুলো।
পেটে খাবার নেই। মাথার ওপর আগুন ঢালছে সূর্য, রুক্ষ পথ ধরে তাঁরা এই পরিস্থিতিতেও হেঁটে চলেছেন। গত মঙ্গলবার দিল্লি থেকে হাঁটা শুরু করেন লকডাউনে এতদিন আটকে থাকা মানুষগুলো। আপাতত সব হারিয়ে তাঁরা বাড়িটা ফিরতে চান। তাতে যদি রাস্তায় মৃত্যুও হয় তাতেও পরোয়া নেই। এমন ভাবেই মনস্থির করে ফেলেছেন তাঁরা। ঘনশ্যাম জানিয়েছেন, সরকার এসি ট্রেন চালু করছে। কিন্তু তাঁদের পক্ষে ওই টাকা দিয়ে টিকিট কেনা অসম্ভব। তাই হাঁটা ছাড়া আর কোনও রাস্তা খোলা নেই।
শ্রমিকরা তাঁদের পরিবার নিয়েই নিজেদের বাড়ি ফিরছেন। ৫০ জনের দলে ৮টি শিশু রয়েছে। এতদিন যখন লকডাউন দিল্লিতেই কাটালেন তখন এঁরা এতদিন পর এমন করে কেন ছুটছেন বাড়ির দিকে? দলের এক সদস্য সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-র প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, তাঁরা এতদিন দিল্লিতে ছিলেন একটি কমিউনিটি কিচেনের ভরসায়। সেখান থেকে খাবার পাচ্ছিলেন। তাই বেঁচে থাকতে পারছিলেন। পকেটে পয়সা নেই। ওই কিচেনও ২-৩ দিন আগে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে খাবারও নেই। এই অবস্থায় হেঁটেই প্রাণ হাতে করে বাড়ি ফিরতে চান তাঁরা। আর কোনও রাস্তা তাঁদের হাতে খোলা নেই। মাথায় নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে তাঁরা শরীরের সব শক্তিটুকু এক করে এগিয়ে চলেছেন বাড়ির দিকে। এখনও যে অনেকটা পথ হাঁটা বাকি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা