প্রয়াত সোনা খুঁজতে পাঠিয়ে হৈচৈ ফেলা সাধু
উন্নাওতে সোনা খুঁজতে পাঠিয়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর আধ্যাত্মিক ক্ষমতার কথা মাথায় রেখে শুরু হয় খনন। সেই সাধু শোভন সরকার চলে গেলেন।
সালটা ২০১৩। স্থান উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের ধুন্দিয়া খেরা গ্রাম। আপাত অখ্যাত এই গ্রাম সে সময় রাতারাতি খবরের শিরোনামে উঠে আসে। কার্যত গোটা দেশ মুখিয়ে ছিল তাল তাল সোনা দেখার জন্য। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া খননও শুরু করেছিল। কারণ সাধু শোভন সরকার জানিয়েছিলেন তিনি স্বপ্নে দেখেছেন সেখানকার এক সময়ের জমিদার রাও রাম বক্স সিংয়ের প্রাসাদের তলায় মাটির নিচে রয়েছে ১ হাজার টন সোনা। সাধু শোভন সরকারকে সে সময় স্থানীয় মানুষজন ভীষণ বিশ্বাস করতেন। তাঁর আধ্যাত্মিক ক্ষমতার প্রতি ভরসা ছিল অটুট।
শোভন সরকার ওরফে সূর্যভান তিওয়ারি যখন বলেছেন যে ওই প্রাসাদের তলায় ১ হাজার টন সোনা রয়েছে তখন তা আছে বলেই বিশ্বাস করতে শুরু করেন সকলে। শোভন সরকার আরও বলেন, এই সোনা তৈরি হয়েছে তাঁর গুরুদের বিন্দু বিন্দু রক্ত দিয়ে। যখন মশা তাঁর গুরুদের কামড়েছে তখনই সেই রক্তবিন্দু মাটিতে পড়ে সোনা হয়েছে। সেই সোনা জমে জমে এই ১ হাজার টন সোনা তৈরি হয়েছে। তিনি আরও জানান, জমিদার রাও রাম বক্স সিং মুক্তি চাইছেন তাঁর কাছে। তিনি ওই সোনার দেখভাল করছেন।
শোভন সরকারের এই দাবি ও তাঁর আধ্যাত্মিক ক্ষমতার ওপর অটুট বিশ্বাস থেকে তৎকালীন কেন্দ্রীয় কৃষি প্রতিমন্ত্রী চরণ দাস মহন্তের সঙ্গে দেখা করেন সাধু শোভন সরকারের এক শিষ্য। বিষয়টি নিয়ে তদ্বির শুরু করেন তিনি। মন্ত্রীকেও বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করান। এর কিছুদিন পর এলাকা ঘিরে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া খননও শুরু করে। সে সময় সংবাদের শিরোনামে তো ওই এলাকা জায়গা করেই নেয়। সেইসঙ্গে বহু উৎসুক মানুষ সাইটের চারপাশে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন যে কখন তাল তাল সোনা বেরিয়ে আসবে। আর তাঁরা তা চর্মচক্ষে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাবেন।
বেশ কিছুদিন খনন চললেও কিন্তু কিছুই বার হয়নি। ফলে এক সময় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া খননকার্যে ইতি টানে। সোনা না পাওয়া যাওয়ায় তখন সাধু শোভন সরকারের আধ্যাত্মিক ক্ষমতা নিয়ে সাধারণ মানুষের অটুট বিশ্বাসে আঘাত লাগে। ফলে তাঁর প্রতি বিশ্বাস কিছুটা ফিকে হয়। সেই সময় রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠা সেই সাধু শোভন সরকারের মৃত্যু হল বুধবার। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা