২১ বছরের গাঁটছড়া ভেঙে গিয়েছিল নির্বাচনের আগেই। ফলে ফাটলের সুযোগ নিয়ে সেই ফাঁক গলে পুরনো জমি ফেরত পাওয়ার একটা সুবর্ণ সুযোগ ছিল কংগ্রেসের সামনে। সঙ্গে হাতিয়ার হিসাবে ছিল নোট বাতিলের জের। কিন্তু কোনও প্যাঁচই কাজে দিলনা। ভোটে জেতার জন্য সাজিয়ে দেওয়া জমিও কাজে লাগাতে ব্যর্থ সঞ্জয় নিরুপমরা। অন্যদিকে শিবসেনা বিজেপি ছাড়াছাড়ির পরও এই দুই শক্তি যে এখনও মুম্বইতে সমানভাবে গ্রহণযোগ্য, তাও বুঝিয়ে দিলেন ভোটাররা। এদিন সকালে গণনা শুরুর পর থেকে ক্রমশ বিজেপিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে থাকে শিবসেনা। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে জয়ী আসনের সংখ্যা। কিন্তু বেলা যতে বাড়তে থাকে, ততই পিছন থেকে জয়ের অঙ্কে ছোটার গতি বাড়ায় বিজেপি। যা শেষে ২২৭টি আসনের মধ্যে ২২৬টি আসনের ফলাফলে এসে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বলে প্রমাণিত হয়।
খতিয়ান বলছে যেখানে শিবসেনার দখলে গেছে ৮৪টি আসন। সেখানে বিজেপির ঝুলিতে ৮১টি। যদিও ১১৪ আসনের ম্যাজিক অঙ্ক কেউই ছুঁতে পারেনি। ফলে জোট নিশ্চিত। তবে কে কার সঙ্গে জোট করবে তা এখনও পরিস্কার নয়। অন্যদিকে শিবসেনা-বিজেপি জোটের সঙ্গে লড়াই করেও ২০১২ সালে কংগ্রেস দখল করেছিল ৫২টি আসন। সেখানে এবারের নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রাপ্তি সব মিলিয়ে ৩১টি। এই অবস্থায় ভরাডুবির সব দায় নিয়ে নির্বাচনে কংগ্রেসের মুখ তথা মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে কংগ্রেসের পুরনো যোদ্ধা সঞ্জয় নিরুপম পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি কংগ্রেসের তরফে পরিস্কার করে দেওয়া হয়েছে তারা কোনও দলকে সমর্থন দিচ্ছেনা। তাহলে বিজেপি বা শিবসেনাকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে নির্দলদের ওপর। বিজেপিকে যদি শরদ পাওয়ারের এনসিপি সমর্থন দিয়েও দেয় তাহলেও হচ্ছে না। কারণ এনসিপির সংগ্রহ সাকুল্যে ৯টি আসন। অন্যদিকে রাজ ঠাকরের নবনির্বাণ সেনার দখলে ৭টি আসন। বাকি ১৪টি নির্দলের। এই ১৪টি আসনই ফ্যাক্টর হয়ে যাবে। কারণ পুর বোর্ড গড়তে ১১৪টি সমর্থন আদায় করতেই হবে। এখন ঘোড়া কেনাবেচা বা বোঝাপড়ার ভিত্তিতে বিজেপি না শিবসেনা, কে শেষ হাসি হাসে তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুটা সময়।