পড়াতেন স্কুলে, এখন জীবনধারণের জন্য কলা বেচছেন শিক্ষক
কয়েক সপ্তাহ আগেও তিনি একটি বড় স্কুলে শিক্ষকতা করছিলেন। করোনা পরিস্থিতি তাঁকে কলা বিক্রেতায় পরিণত করেছে।
অমরাবতী : এক নিদারুণ কাহিনি। এক চরম সত্যের মুখোমুখি গোটা দেশ। একজন ডবল এমএ বা ২টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করা, সঙ্গে বিএড পাশ করা শিক্ষককে এখন রাস্তায় রাস্তায় ঠেলা ঠেলে কলা বেচতে হচ্ছে জীবনধারণের জন্য। কলা বেচাটা দোষের নয়। কোনও খারাপ কাজও নয়। কিন্তু একজন শিক্ষককে সেকাজ করতে হবে কেন সে প্রশ্ন উঠছে। করোনা দেশে থাবা বসানোর আগেও যে ব্যক্তি একটি বড় স্কুলে শিক্ষকতা করছিলেন। তিনি এখন রাস্তায় রাস্তায় ঠেলা নিয়ে কলা বেচে জীবন চালাচ্ছেন।
অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর শহরের একটি স্কুলে পড়াতেন পি ভেঙ্গট সুব্বাইয়া। ৪৩ বছরের এই ব্যক্তি জানান, করোনা আবহে স্কুলের তরফে তাঁকে জানানো হয় যদি মাইনে ঠিক সময়ে পেতে হয় তাহলে তাঁকে ৫ থেকে ৬ জনকে স্কুলে আনতে হবে ভর্তি করার জন্য। তাঁকে এটা জানানোর পর তাঁকে স্কুলেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। এদিকে মাইনের জন্য এমন টার্গেট পূরণ সম্ভব হয়নি ওই তেলেগু শিক্ষকের পক্ষে। তিনি জানান, স্কুলে ভর্তি করানো তো দূর, এই অবস্থায় কথা বলার জন্যও কেউ তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছিলেন না।
বন্ধ হয়ে যায় মাইনে। কিন্তু জীবনে বেঁচে থাকতে গেলে, পরিবার প্রতিপালন করতে গেলে তাঁকে রোজগার করতেই হত। ফলে কোনও রাস্তা না পেয়ে তিনি বেছে নেন কলা বেচাকে। একটি ঠেলা গাড়িতে তখন প্রত্যেকদিন কলা নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘোরা শুরু করেন শিক্ষক সুব্বাইয়া। কলা বেচে যা মুনাফা হয় সেটা দিয়েই সংসার চালাচ্ছেন তিনি। শোধ করছেন ছেলের চিকিৎসার জন্য নেওয়া সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা ঋণের মাসিক কিস্তিও।
কত রোজগার হয় দিনে? সুব্বাইয়া জানিয়েছেন দিনে ২০০ টাকাও রোজগার হয়না কলা বেচে। তবে তাঁর পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন তাঁর কয়েকজন প্রাক্তন ছাত্র। তাঁরা সুব্বাইয়ার জন্য ৮৭ হাজার টাকা সংগ্রহও করেছেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা