গ্রামবাসীদের উপস্থিত বুদ্ধিতে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন বরকনে
নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন বরকনে ও বরের বাড়ির ৪ জন। গ্রামবাসীদের উপস্থিত বুদ্ধির জোরেই নতুন জীবন পেলেন তাঁরা।
পালামৌ (ঝাড়খণ্ড) : সিনেমার টানটান ক্লাইম্যাক্সে এমনটা হয়। সেটাই হল বাস্তবে। বিয়ে শেষ। পরদিন কনে বিদায়ের পালা শেষ করে বরকনে গাড়িতে চলেছেন বরের বাড়ি। বরের বাড়ির ৪ জন সঙ্গে রয়েছেন। যদিও এই ৪ জনের ৩ জনই শিশু। ফলে গাড়িতে অসুবিধা হয়নি। কনের বাড়ি থেকে বরের বাড়ি বেশ কিছুক্ষণের পর। পথের মাঝে পড়ে একটি ব্রিজ। নিচ দিয়ে বয়ে গেছে নদী। বর্ষাকালে সে নদী দিয়ে প্রবল স্রোত বয়। ব্রিজের ওপর গাড়ি পৌঁছতে চালক কোনওভাবে নিয়ন্ত্রণ হারান। আর বরকনে সমেত সকলকে নিয়ে গাড়ি সোজা গিয়ে পড়ে সেই খরস্রোতা নদীতে।
নদীর প্রবল স্রোতে গাড়ি গিয়ে পড়তেই আস্ত গাড়িটি মোচার খোলের মত ভাসিয়ে নিয়ে যেতে থাকে জলের স্রোত। গাড়ির অনেকটাই জলে ডুবে যায়। এদিকে এভাবে গাড়িটি পড়ে যাওয়া নজরে পড়ে গ্রামবাসীদের। তাঁদের বেশ কয়েকজন দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই স্রোতেই লাফ দেন। হাতে ছিল মোটা দড়ি। নদীর পাড়ে তখন গ্রামবাসী আরও যুবক অপেক্ষায়। যাঁরা স্রোতে লাফ দেন তাঁরা স্রোতের তালে ভেসে কোনওভাবে মাঝ নদী দিয়ে ভেসে চলা গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে যান। তারপর দ্রুত গাড়িতে বেঁধে দেন দড়ি।
পাড় থেকে সেই দড়ি ধরে রাখেন বাকিরা। যাতে গাড়িটি স্রোতে আর বেরিয়ে যেতে না পারে। স্রোতের প্রবল শক্তির সঙ্গে গ্রামবাসীদের দড়ি টেনে রাখার লড়াই শুরু হয়। আর তারমধ্যেই দ্রুত গাড়ি থেকে সকলকে এক এক করে বার করার কাজ করতে থাকেন জলে থাকা যুবকরা। তাঁদের তৎপরতা আর উপস্থিত বুদ্ধির জোরে প্রত্যেকের জীবন বাঁচে। এক এক করে সকলকে পাড়ে তুলে আনা হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের পালামৌ জেলার খামদি গ্রামের কাছে মলয় নদীতে। বর্ষায় এ নদীর চেহারা ভয়ংকর হয়ে ওঠে। লাতেহার জেলার মাতলং গ্রামে বিয়ে সেরে নবদম্পতি ফিরছিলেন বরের বাড়ি লেসলিগঞ্জে। মাঝে ঘটে এই ঘটনা। গ্রামবাসীরা না থাকলে নবদম্পতির আর নতুন সংসার গড়া হতনা বলে মেনে নিচ্ছেন সকলেই। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা