পুলিশ আসছে, আগেই ফোনে জানতে পারে বিকাশ
পুলিশ যে আসছে তা আগেই জানতে পেরে গিয়েছিল কুখ্যাত দুষ্কৃতি বিকাশ দুবে।
কানপুর : তবে কী সর্ষের মধ্যেই ভূত? সরাসরি তেমনটা না জানালেও ২ পুলিশকর্মীর সঙ্গে বিকাশ দুবের মাখামাখির কথা জানতে পেরেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, পুলিশ যে রাতে বিকাশ দুবেকে ধরতে গ্রামে ঢুকছে তার খবর বিকাশকে আগেই দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই সবদিক থেকে তৈরি হয়েই ছিল বিকাশ ও তার দলবল। পুলিশ আসতেই পুলিশের ওপর শুরু হয় আক্রমণ। বিকাশ যে আগেই পুলিশের আসার কথা জানতে পেরে গিয়েছিল তা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে বিকাশ ঘনিষ্ঠ দয়াশঙ্কর অগ্নিহোত্রী।
দয়াশঙ্কর জানিয়েছে, সে বিকাশ দুবের বাড়িতে রান্নার কাজ করে। তার স্ত্রী ওই বাড়িতেই পরিচারিকার কাজ করে। দয়াশঙ্কর দাবি করেছে সে বন্দুক চালাতে পারেনা। তবে পুলিশের ওপর যখন হামলা হচ্ছে তখন সে ওই বাড়িতেই ছিল। তবে একটা ঘরে বন্ধ অবস্থায়। তদন্তকারীরা বিকাশ ঘনিষ্ঠ ২ পুলিশকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদও শুরু করেছেন। তবে তাঁদের কাছ থেকে ঠিক কী পুলিশ জানতে পেরেছে তা জানা যায়নি। পুলিশের অনুমান পুলিশের মধ্যে এমন আরও কেউও থাকতে পারেন বিকাশ ঘনিষ্ঠ। ওইদিন পুলিশের মধ্যে থেকেই খবর বিকাশের কাছে পৌঁছেছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
৬০টি ফৌজদারি মামলায় পুলিশ বিকাশ দুবেকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল। সেই কুখ্যাত দুষ্কৃতি বিকাশ দুবে একটি গ্রামে লুকিয়ে আছে সে খবরটা বৃহস্পতিবার রাতেই পৌঁছেছিল পুলিশের কানে। দেরি করেনি পুলিশও। ৫০ জনের পুলিশবাহিনী মধ্যরাতেই কানপুরের কাছে ভিকরু গ্রামে ঢোকে বিকাশকে পাকড়াও করতে। বিকাশ যে সহজে হাতে আসার নয় তা বিলক্ষণ জানা ছিল পুলিশের। তাই যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশকর্মী নিয়েই গ্রামে হাজির হয় বাহিনী। কিন্তু গ্রামে কিছুটা ঢুকতেই রাস্তার ওপর একটা জেসিবি মেশিন দেখতে পায় তারা। যা দিয়ে পথ আটকানোর চেষ্টা করা হয় পুলিশের। এটা দেখার পরই পুলিশ বুঝতে পারে তারা যে আসছে তা আগেই দুবের দলের কাছে খবর রয়েছে।
তখন রাত সাড়ে ৩টে। পুলিশ জেসিবি মেশিনে আটকানো পথ পেরিয়ে যে বাড়িতে বিকাশ লুকিয়ে রয়েছে বলে খবর ছিল সেটার দিকে এগোয়। আর তখনই বাড়ির ছাদ থেকে বৃষ্টির মত তাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ হতে থাকে। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যেতে থাকে একের পর এক পুলিশের দেহ। তাঁরা লুটিয়ে পড়তে থাকেন মাটিতে। ছাদ থেকে গুলির সঙ্গে সঙ্গে উড়ে আসতে থাকে বিশাল বিশাল পাথরের খণ্ড। অগত্যা পিছু হঠতে বাধ্য হয় পুলিশ। আর তখনই বিকাশের গোটা দল রক্তাক্ত পুলিশকর্মীদের কাছ থেকে বন্দুক ও গুলি ছিনিয়ে সেখান থেকে রাতের অন্ধকারে চম্পট দেয়। গুলিতে মৃত্যু হয় এক সার্কেল ইন্সপেক্টর সহ ৮ পুলিশকর্মীর। ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে নির্দেশ দেন যত দ্রুত সম্ভব বিকাশ দুবেকে গ্রেফতার করতে হবে। তবে এখনও বিকাশ অধরাই। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা