আশির্বাদ হল করোনা, ৩৩ বছর পর দশম শ্রেণিতে পাশ প্রৌঢ়
আশির্বাদ হয়েই তাঁর জীবনে এল করোনা। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ৩৩ বছর পর পাশ করলেন প্রৌঢ়।
হায়দরাবাদ : কম চেষ্টা করেননি। বিফল হয়েছেন। বারবার বিফল হয়েছেন। কিন্তু লড়াই থামাননি। চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা তিনি পাশ করবেনই। এই ইচ্ছাশক্তিটাকে কখনও মরতে দেননি। আর সেই হার না মানা ইচ্ছাশক্তি অবশেষে তাঁকে জিতিয়ে দিল। তবে তাঁর এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে একটি মাত্র নাম। সেটি হল করোনা। করোনা যখন বিশ্বের জন্য অভিশাপ হয়ে নেমে এসেছে, সেখানে এই ৫১ বছরের প্রৌঢ়ের জীবনে তা আশির্বাদ হয়ে দেখা দিল। ৩৩ বছর পর দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় পাশ করলেন তিনি।
১৯৮৭ সালে প্রথমবার সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় বসেন হায়দরাবাদের মহম্মদ নূরউদ্দিন। সেবার সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও আটকে যান ইংরাজিতে। ফলে পাশ করা হয়নি। তারপরের বছর শুধু ইংরাজি দিতে বসেন। কিন্তু পাশ করতে পারেননি। তারপর পরের বছরও একই হাল। আর এমন করে এরপর চলতেই থাকে। পাড়া প্রতিবেশিরা হাসিঠাট্টা শুরু করেন। কিন্তু তাতে আমল না দিয়ে নূরউদ্দিনও স্থির করে নেন ততদিন পরীক্ষা দিয়ে যাবেন যতদিন না তিনি পাশ করছেন।
মহম্মদ নূরউদ্দিন জানিয়েছেন, এরমধ্যে অবশ্য তিনি সুরক্ষাকর্মীর চাকরিতেও যোগ দেন। বিয়েও করেন। ১৯৯৪ সালে বিয়ের পরও তিনি কিন্তু প্রতিবছর পরীক্ষায় বসা বন্ধ করেননি। কিন্তু নূরউদ্দিন জানাচ্ছেন, এত চেষ্টা করেও তিনি কিছুতেই ১০০-র মধ্যে ৩৫ নম্বর তুলে উঠতে পারেননি। কখনও কখনও ৩৩ পেলেও ৩৫টা হয়নি। ফলে পাশ করাও হয়নি। আর এমন করেই ৩৩ বছর কেটে যায়।
২০২০ সালে তিনি আবার কেবল ইংরাজি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পরীক্ষার ফি জমা দেওয়ার শেষ দিনটা হাতছাড়া করেন। ফলে তাঁকে এবার ৬টি বিষয়ে ফের বসতে হত। তাতেও তিনি রাজি ছিলেন। তৈরিও হচ্ছিলেন। আর তার মাঝেই এল করোনা। করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল আকার নেওয়ায় পরীক্ষা বাতিল করে বোর্ড। জানিয়ে দেয় এবার আর কেউ ফেল নয়। সবাই পাশ। যার হাত ধরে মহম্মদ নূরউদ্দিনও এবার পাশ করে গেলেন বোর্ডের পরীক্ষায়। হাতে পেলেন ৩৩ বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকা এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা