দিল্লিতে গ্রেফতার আইসিস জঙ্গির বাড়িতে মিলল প্রচুর বিস্ফোরক, আত্মঘাতী পোশাক
দিল্লি থেকে গ্রেফতার আইসিস জঙ্গির বাড়িতে হানা দিল দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। বাড়িতে মিলল প্রচুর বিস্ফোরক, আত্মঘাতী পোশাক।
নয়াদিল্লি : বড়সড় নাশকতার ঘটনা ঘটতে ঘটতেও ঘটেনি পুলিশের তৎপরতায়। দিল্লিতে বিস্ফোরক রেখে তা ফাটানোর আগেই সেগুলি নিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে এক আইসিস জঙ্গি। পুলিশ জানতে পারে ওই জঙ্গি উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর জেলার বাসিন্দা। সেখানে সে একটি প্রসাধনীর দোকান চালায়। কিন্তু তার পিছনে সে আইসিস জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। দিল্লি এসেছিল বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটাতে। শুক্রবার গভীর রাতে দিল্লির ধওলা খান-করোল বাগ রুটে আইসিস জঙ্গি মহম্মদ মুসকান খান ওরফে আবু ইউসুফ খানকে অল্প সময়ের গুলি বিনিময়ের পর গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় দিল্লি পুলিশ। জানতে পারে তার বাড়ি বলরামপুরে। তারপর রবিবার তার বাড়িতে হানা দেয় দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল।
বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় আরও বিস্ফোরক। উদ্ধার হয় বিস্ফোরণ ঘটানোর যন্ত্রপাতি। এছাড়া ২টি আত্মঘাতী পোশাক উদ্ধার হয়েছে। যা ব্যবহার হয় মানববোমার কাজে। ওই পোশাক পরে নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে গায়ে বাঁধা বিস্ফোরক ফাটিয়ে দেয় জঙ্গিরা। নিজেরা যেমন উড়ে যায় তেমনই ওই এলাকা তছনছ হয়ে যায়। এমনই ভয়ানক এই আত্মঘাতী পোশাক। এছাড়া আইসিস-এর পতাকা এবং ওই জঙ্গি সংগঠনের বেশ কিছু কাগজ পাওয়া গিয়েছে বাড়ি থেকে। আরও একটি সাফল্য পেয়েছে পুলিশ। আবু ইউসুফ খানকে গ্রেফতার করতে পারলেও তার ২ সঙ্গী পালাতে সক্ষম হয়েছিল শুক্রবার রাতে। তাদের ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ১৫ অগাস্টেই ছিল হামলার ছক। কিন্তু দিল্লি জুড়ে সুরক্ষার কড়াকড়ি থাকায় তখন কিছু করে উঠতে পারেনি আবু ইউসুফ। অপেক্ষায় ছিল কখন সুরক্ষা বলয় আলগা হয়। দিল্লি পুলিশ যে সমান সজাগ রয়েছে তা বুঝে উঠতে পারেনি। তাই ২টি প্রেশারকুকার আইইডি বোমা বিস্ফোরণের ছক কষে তা নির্দিষ্ট জায়গায় রাখতে যাচ্ছিল আইসিস জঙ্গি। লক্ষ্য ছিল দিল্লির কোনও জনবহুল এলাকায় বোমা ২টির বিস্ফোরণ ঘটানোর। কিন্তু সেই চেষ্টা শেষ মুহুর্তে বানচাল করে দেয় দিল্লি পুলিশ। গত শনিবার এমনই জানিয়েছিলেন দিল্লির ডিসিপি স্পেশাল সেল।
গত শুক্রবার গভীর রাতে দিল্লির ধওলা খান-করোল বাগ রুটে আইসিস জঙ্গি মহম্মদ মুসকান খান ওরফে আবু ইউসুফ খানকে ঘিরে ফেলে পুলিশ। শুরু হয় গুলির লড়াই। অল্প সময় স্থায়ী হয় গুলির লড়াই। পুলিশ দেখে গুলি চালাতে শুরু করলেও তা বেশিক্ষণ চালাতে পারেনি ওই আইসিস জঙ্গি। ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। তবে তার ২ সঙ্গী পালাতে সক্ষম হয়। তাদের অবশেষে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ।
পুলিশ জানাচ্ছে, আবু ইউসুফ খান ২০১৫ সালে আইসিস-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ভারতে বড়সড় নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পনা করছিল সে। শক্তিশালী আইইডি বানানো সে ভারতে বসেই শিখেছিল। তাকে এই বোমা তৈরি শেখায় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইসিস-এর আইইডি বোমা তৈরি বিশেষজ্ঞ বলে পরিচিত আবু হুজাইফা। আফগানিস্তানে বসে সোশ্যাল সাইটে আবু ইউসুফকে তালিম দেয় সে। গত বছর অবশ্য একটি ড্রোন হানায় মৃত্যু হয় আবু হুজাইফা-র।
উত্তরপ্রদেশের বলরামপুরের বাসিন্দা আবু ইউসুফ খানের একটি প্রসাধনীর দোকান রয়েছে। সেখানে বসেই সে প্রেশারকুকার বোমা তৈরি করেছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এদিকে তার কাছ থেকে ২টি প্রেশারকুকার বোমা ছাড়াও একটি বন্দুক, ৪ রাউন্ড গুলি ও ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ। এবার তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হল বিস্ফোরক, আত্মঘাতী পোশাক। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা