National

মায়ের মৃত্যুর পর প্রচলিত রীতি থেকে বিরত রইল পরিবার, করল অন্যকিছু

মায়ের মৃত্যুর পর বেশ কিছু প্রচলিত রীতির রাস্তায় হাঁটল না এক চিকিৎসক পরিবার। তবে যা করল তা হৃদয় ছুঁয়ে গেল সকলের।

হামিরপুর (উত্তরপ্রদেশ) : বয়স হয়েছিল। ফলে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা তাঁকে গ্রাস করেছিল। গত সপ্তাহে বার্ধক্যজনিত কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়। বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর পেয়ে হাজির হন তাঁর ছেলে। পেশায় চিকিৎসক ছেলে সপরিবারে তাঁদের উত্তরপ্রদেশের হামিরপুরের বিহুনি গ্রামের আদি বাড়িতে হাজির হন। বাড়িতে শোকের ছায়া। মায়ের শেষকৃত্য নিয়ম মেনেই সম্পন্ন করেন চিকিৎসক ছেলে প্রমোদ গুপ্তা। যিনি ঝাঁসি জেলায় চিকিৎসক হিসাবে কাজ করেন।

মায়ের শেষকৃত্যের পর অশৌচ পর্ব কাটিয়ে পারলৌকিক ক্রিয়া। যেমন হিন্দু রীতি মেনে হয়ে থাকে তা সম্পন্ন হয়। শ্রাদ্ধ ও নিয়মভঙ্গে মানুষজনকে খাওয়ানোর রীতি বহুদিনের। বিহুনি গ্রামে কারও মৃত্যুর পর পারলৌকিক ক্রিয়া শেষে গ্রামবাসীদের সকলকে পাত পেড়ে খাওয়ানো একটা পরম্পরার মত। কিন্তু সেই প্রচলিত পরম্পরা মানলেন না চিকিৎসক প্রমোদ গুপ্তা। তিনি কাউকেই নিমন্ত্রণ করলেন না। বরং অন্য রাস্তায় হাঁটলেন।


প্রমোদ গুপ্তা ওই গ্রামের ও আশপাশ মিলিয়ে দুঃস্থ পরিবারের ২৫টি ছোট ছোট মেয়ের নামে ৫ হাজার টাকা করে ফিক্সড ডিপোজিট করে দিয়েছেন। প্রমোদ জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে দুঃস্থ পরিবারগুলির পরিস্থিতি অত্যন্ত শোচনীয় হয়েছে। শিশুদের ওপর এই অর্থাভাবের প্রভাব পড়ছে। তাই লোক খাইয়ে খরচ করতে তিনি রাজি নন। তিনি খাওয়ানোর খরচের টাকা ২৫টি ছোট ছোট দরিদ্র পরিবারের মেয়ের মধ্যে ৫ হাজার টাকা করে ভাগ করে ফিক্সড ডিপোজিট করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

গুপ্তা পরিবারের সকলে এই কাজে সম্মতিও জানিয়েছেন। প্রমোদ গুপ্তা জানিয়েছেন তাঁর বিশ্বাস তাঁর এই কাজে তাঁর প্রয়াত মা-ও খুশিই হবেন। এভাবে পুরনো ধ্যানধারণা, প্রচলিত রীতি ভেঙে প্রমোদের এই উদ্যোগ রীতিমত হৃদয় ছুঁয়ে গেছে অনেকের। অনেকেই এই প্রথা ভাঙা পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। দরিদ্র মেয়েদের পাশে দাঁড়ানোর এই অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে সমাজের বিভিন্ন মহল। প্রমোদ গুপ্তাও খুশি এইটুকু সাহায্য করতে পেরে। একটা উদাহরণ তৈরি করে দিলেন তিনি। যা হয়তো আগামী দিনে অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করতে পারে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button