করোনা থেকে সেরে ওঠা মাকে বাড়িতে ঢুকতে দিল না ছেলে
করোনা সেরে গেছে। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তারপরেও মাকে বাড়িতে ঢুকতে দিল না ছেলে।
হায়দরাবাদ : ছেলের চরম অমানবিক আচরণের শিকার হলেন মা। করোনা হওয়ার পর হাসপাতালে থেকে করোনা থেকে সেরে উঠেছেন মা। কিন্তু তারপরেও মাকে বাড়িতে ঢুকতে দিল না ছেলে।
আপাতত বৃদ্ধার জায়গা হয়েছে বাড়ির সামনে খোলা আকাশের নিচে। প্রতিবেশিরাই এখন তাঁর ভরসা। তাঁরাই ওই বৃদ্ধাকে খাবার, পানীয় দিয়ে যাচ্ছেন।
বৃদ্ধা বাড়ির সামনেই পড়ে আছেন দিনের পর দিন। পাছে প্রতিবেশিদের থেকে চাপ আসে তাই বাড়ির দরজায় তালা লাগিয়ে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে সেখান থেকে অন্যত্র গিয়ে আছে বৃদ্ধার ইঞ্জিনিয়ার ছেলে।
বৃদ্ধাকে অনেক আগেই সংসার থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে বিদ্যুৎ দফতরে ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মরত উচ্চশিক্ষিত ছেলে। তাঁকে অনেক আগেই বৃদ্ধাশ্রমে রেখে ঝাড়া হাত পা হয়েছিল ছেলে।
মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে সংসার করছিল ওই ব্যক্তি। কিন্তু বৃদ্ধাশ্রমে থাকাকালীন বৃদ্ধার করোনা ধরা পড়ে। ফলে ছেলেকে খবর দিয়ে বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয় বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালে ক্রমে সুস্থ হয়ে ওঠেন বৃদ্ধা। তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ছেলেকে একাধিকবার হাসপাতাল থেকে ফোন করা হয়। কিন্তু ছেলে হাসপাতালে গিয়ে মাকে আনার রাস্তাতেই যায়নি।
এভাবে এক সপ্তাহ ধরে ছেলেকে জানিয়েও কাজ না হওয়ায় হাসপাতাল থেকে বৃদ্ধাকে বাড়ির সামনে ছেড়ে যাওয়া হয়। এদিকে বাড়িতে ফিরে বৃদ্ধা দেখেন দরজায় তালা।
ছেলে হয়তো আন্দাজ করেছিল যে এমনটা হতে পারে। তাই আগেই দরজায় তালা ঝুলিয়ে পরিবার নিয়ে সেখান থেকে চলে যায় সে। মাকে বাড়িতে ঢোকানোর জন্য তাকে ফোনে বলাতেও কাজ হয়নি। করোনা সারলেও বাড়িতে মাকে ঢোকানো যাবে না বলে জানিয়ে দেয় ওই ইঞ্জিনিয়ার পুত্র।
ফলে বাড়ির সামনের রাস্তাই এখন বৃদ্ধার ঠিকানায় পরিণত হয়েছে। ভরসা কেবল প্রতিবেশিরা। ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার নিজামাবাদ শহরে। একই ঘটনা কিছুদিন আগে ঘটেছিল মহারাষ্ট্রে। ৮০ বছরের বৃদ্ধা মায়ের করোনা নেগেটিভ হলেও তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি ছেলে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা