রাবণ কেনার লোক নেই, দশাননের রূপকারদের মাথায় হাত
রাবণ কেনার একটা লোকও নেই। করোনা এতেও বাধ সেধেছে। ফলে দশাননের রূপকারদের মাথায় হাত।
নয়াদিল্লি : প্রতি বছর এই সময়টায় দম ফেলার ফুরসত থাকেনা। হাতে আর একটা মাস। তারপরেই দেশে তো বটেই, এমনকি বিদেশেও দশেরার সন্ধেয় দাউদাউ করে জ্বলে ওঠার কথা রাবণ, কুম্ভকর্ণ ও মেঘনাদের। ভারতের দশেরা পালন সারা বিশ্বের মানুষের কাছেই দেখার মত এক উৎসব। কিন্তু এবার ১০ মাথার রাবণ হোক বা বিশাল দেহী কুম্ভকর্ণ, কারও চাহিদা নেই।
দেশবিদেশ মিলিয়ে হাজার হাজার রাবণ দহন পালিত হয় দশেরার দিন। আর সেসব রাবণ, কুম্ভকর্ণ বা মেঘনাদের যে অতিকায় সব কুশপুতুল তৈরি হয় তার সিংহভাগ তৈরি হয় দিল্লির তিতরপুরে।
দিল্লির তিতরপুরে দশেরার মাস খানেক আগে থেকেই দেখা যায় রাস্তা, পার্ক, বারান্দা সর্বত্র শিল্পীদের ভিড়। রাত দিন এক করে নাওয়াখাওয়া ভুলে তাঁরা তৈরি করে চলেন রাবণ দহনের কুশপুতুল। অর্ডার এতই থাকে যে তা সময়মত পাঠাতে ২৪ ঘণ্টাও কাজের জন্য কম পড়ে তখন।
প্রতি বছরের চেনা ছবিটা কিন্তু এবার একদম বদলে গেছে। তিতরপুরে কোনও ব্যস্ততা নেই। সেখানকার শিল্পীরা জানাচ্ছেন একটা অর্ডারও এখনও পর্যন্ত আসেনি তাঁদের কাছে। ফলে তৈরি কিছু হয়েছে বটে, তবে তা নামমাত্র।
দশ মাথার রাবণ বানিয়ে খরচ করে যদি তা বিক্রি না হয় তাহলে তো এই করোনা আবহে আরও মাথায় হাত। তাই তাঁরা বিশেষ তৈরির রাস্তায় হাঁটছেনই না। অথচ হাতে আর ১টি মাস বাকি দশেরার সন্ধে নামতে।
এখানে যে শিল্পীরা কাজ করেন তাঁরা সকলেই স্থানীয় নন। এই সময় রাবণ বানাতে দশেরার মাস দুয়েক আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা থেকে শিল্পীরা হাজির হন সেখানে। তারপর জোরকদমে চলে কাজ।
এই দুমাসের রোজগারে অনেকটা নির্ভর করে শিল্পীদের জীবন। এই সময়ের রাতদিনের পরিশ্রম থেকে হওয়া রোজগারে বছরের অনেকটা সময় তাঁরা সংসার চালাতে পারেন। ফলে এই সময়ের রোজগারটার জন্য সারাটা বছর চেয়ে থাকেন শিল্পীরা।
কিন্তু এবার করোনা তাঁদের সেই রোজগারটুকুও কেড়ে নিয়েছে। তবে হাল ছাড়েননি তাঁরা। কথায় বলে আশায় বাঁচে চাষা। সেই প্রবাদ মেনেই তাঁরা এখনও পথ চেয়ে আছেন। যদি দশেরার আগে কিছু অর্ডার আসে। তাহলেও কিছুটা তো রোজগার হবে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা