বিয়ে চলাকালীন শহর জুড়ে চলল অন্য ভোজন
এক তরুণ-তরুণীর বিয়ে যতক্ষণ চলল ততক্ষণ শহরের কোণায় কোণায় চলল অন্য খাওয়াদাওয়া। একদম অন্যরকম। নবদম্পতির এমন ইচ্ছাকে বাহবা জানালেন অনেকে।
ভুবনেশ্বর : এক তরুণ ও এক তরুণীর বিয়ে। করোনার মধ্যেই বিয়ে হল তাঁদের। তবে বিয়েটা হল একটা গ্রামের মন্দিরে। সেখানেই সাতপাকে বাঁধা পড়লেন তাঁরা। ৩ বছরের প্রেম পেল দাম্পত্যের স্বীকৃতি।
তাঁদের প্রেমপর্ব চলাকালীন একদিন তাঁরা দেখেন একটি কুকুর গাড়ির ধাক্কায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। তাকে উদ্ধার করে তাঁরা নিয়ে যান একটি সংগঠনের কাছে। যারা রাস্তায় থাকা অবহেলিত পশুদের নিয়ে কাজ করে। তাদের যত্ন করে। সেই থেকে ওই সংস্থার সঙ্গে তরুণ তরুণীর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়ে যায়।
ইউরেকা আপতা নামে ওই তরুণ ছিলেন পাইলট। তারপর সেকাজ ছেড়ে এখন তথ্যচিত্র তৈরি করেন। অন্যদিকে তাঁর সদ্যবিবাহিতা স্ত্রী জোয়ানা একজন দন্ত চিকিৎসক।
করোনা দেশে থাবা বসানোর পর আর্থিক দিক থেকে বড় ধাক্কা খান আপতা। তাঁর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তবে তারমধ্যেই ২ জনে স্থির করেন তাঁরা বিয়ে এর মধ্যেই করবেন।
সেইমত গত ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁদের বিয়ে ছিল। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেন তাঁরা। তবে তা শুধু বিয়ের জন্যই নয়।
পথে ঘুরে বেড়ানো পশুদের যন্ত্রণা তাঁদের বারবার ছুঁয়ে যেত। তাই তাঁরা স্থির করেছিলেন তাঁদের বিয়েতে তাঁরা পথের অবহেলিত পশুদের জন্য কাজ করা ওই সংস্থাকে কিছু আর্থিক সাহায্য দেবেন। তাই দেনও।
এছাড়াও তাঁরা চেয়েছিলেন তাঁদের বিয়েতে খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্ত রাখতে। তবে তা আত্মীয় পরিজন, বন্ধুবান্ধবদের জন্য নয়।
ইউরেকা ও জোয়ানার ইচ্ছামতই গ্রামের মন্দিরে যখন তাঁদের বিয়ে চলছিল ঠিক তখনই ওই পশুদের নিয়ে কাজ করা সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা শহরের কোণায় কোণায় ঘুরে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো কুকুরদের জন্য সুস্বাদু করে রাঁধা ভাত আর প্রোটিন জাতীয় খাবার পরিবেশন করেন।
বিয়ের মুহুর্তে পশুদের জন্য এই খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্তের পুরো খরচ দেন ওই নবদম্পতি। ৫০০টি পথ পশুকে খাওয়ানো হয় বিয়ের সময়। এখানেই যা খরচ করার করেন ২ জনে। বাকি বিয়েটা হয় অত্যন্ত সাদামাটা ভাবে।
আপতা জানান কোনও দামি শাড়ি কিনে নয়, বিয়ের পিঁড়িতে জোয়ানা বসেন আপতার মায়ের বিয়েতে পরা শাড়ি পরে।