চাষির হাতে রিমোট, ক্ষেতে বীজ বপন হবে আকাশ থেকে
হাতে রয়েছে রিমোট। আর সামনে রয়েছে ক্ষেত জমি। কৃষকরা সেই ক্ষেত জমির ধারে দাঁড়িয়েই এখন বপন করে ফেলছেন বীজ। কার্যত বিনা পরিশ্রমে।
বারাণসী (উত্তরপ্রদেশ) : আধুনিকতা যদি জীবনের সব ক্ষেত্রে সুবিধার হাতছানি নিয়ে হাজির হতে পারে তাহলে কৃষিক্ষেত্রই বা নয় কেন? সেটাই হল এবার। আগামী দিনে হয়তো ভারতের সব চাষিকে দেখা যাবে নিজের ক্ষেতের এক ধারে দাঁড়িয়ে হাতে রিমোট নিয়ে চাষাবাদ করতে।
অবাক হওয়ার মত কথা হলেও সেই পথেই এগোচ্ছে দেশ। উত্তরপ্রদেশে ইতিমধ্যেই কৃষকদের এ বিষয়ে হাতেকলমে শিক্ষা দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গেছে।
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস-এর অধিকর্তা রমেশ চাঁদ নিজে হাজির হয়েছিলেন খতাহান গ্রামে। সেখানে তিনি গ্রামের কৃষকদের হাতেকলমে দেখান কীভাবে চাষের কাজে ড্রোন ব্যবহার করতে হবে।
এতদিন ড্রোন জিনিসপত্র আনা নেওয়া, সিনেমা, টিভির শ্যুটিং থেকে নজরদারি, অনেক কিছুতেই ব্যবহৃত হয়েছে। এবার তা ব্যবহার হবে কৃষকদের জন্যও।
রমেশ চাঁদ জানান, ধান ও গম, এই ২ প্রকার শস্য বপন করতে ক্ষেতের পরিস্থিতি ২ রকম হতে হয়। ধানের ক্ষেত্রে লাগে প্রচুর জল থাকা জমি আর গমের ক্ষেত্রে লাগে ভেজা জমি সঙ্গে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা।
মাঠে এমনও হয় যে ট্রাক্টর সর্বত্র যেতে পারেনা কাদা মাটির জন্য। এই অবস্থায় বড় ভরসা হতে পারে ড্রোন। ড্রোন দিয়ে মাঠে সুন্দরভাবে ছড়ানো যায় ধান বা গমের বীজ। বপন করা যায় মাটিতে।
বীজ বপন ছাড়াও জমিতে ফলন বৃদ্ধির জন্য যাবতীয় উপাদানও ড্রোনের সাহায্যে ছড়ানো যেতে পারে। ১ বিঘা জমিতে বীজ বপন করতে ড্রোনের ১৫ মিনিট সময় লাগে।
এভাবে বীজ বপন করলে তাতে সময় যেমন বাঁচবে তেমনই কায়িক পরিশ্রম বলে কিছু হবে না। আবার জমিতে বীজ সুন্দরভাবে বপনও হয়ে যাবে।
এছাড়াও এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করলে কৃষকদের বীজ বপনের খরচও কমবে বলে দাবি করেছেন রমেশ চাঁদ। ফলে এই ড্রোন কৃষকবন্ধু হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কৃষিনির্ভর ভারতের আগামী দিনের চাষাবাদে ড্রোন এক যুগান্ত আনতে পারে বলেই মনে করছেন সকলে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা