হাতিকে মদ্যপানে বাধ্য করায় মালিকের বিরুদ্ধে দায়ের অভিযোগ
হাতিকে জোর করে দিনের পর দিন মদ্যপান করাত তার মনিব। বিষয়টি নজরে আসতে হাতিটিকে উদ্ধার করল বন দফতর। মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আগ্রা : ৪০ বছর বয়স হয়েছে ইমা-র। বৃহৎ চেহারার এই হস্তিনী কিন্তু এখন নানা রোগে জর্জরিত। যদিও তার রোগ যন্ত্রণা নিয়ে তার মনিবের কোনও মাথাব্যথা ছিলনা। বরং রোগে জর্জরিত হাতিকে দিয়ে নানা ভাবে রোজগারের রাস্তা খুলেছিল সে।
যাতে হাতি কাজ চালিয়ে যেতে পারে সেজন্য অদ্ভুত এক পথ অবলম্বন করেছিল হাতির মনিব। ইমা-কে সে নিয়মিত দিশি মদ পান করাত। দিনের পর দিন এভাবে মদ্যপানে হাতিটির শরীরের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে ওঠে।
অবশেষে এই খবর গিয়ে পৌঁছয় ঝাড়খণ্ডের বন দফতর ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওয়াইল্ডলাইফ এসওএস-এর কাছে। খবর পেয়ে তারা হাতিটিকে উদ্ধার করেছে। হাতির মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
ইমাকে একাধিক ব্যাধি গ্রাস করেছে। তার অস্টিওআর্থারাইটিস চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। যার জন্য তার প্রবল যন্ত্রণা হচ্ছে। জয়েন্টে নানা ধরণের সমস্যা তৈরি হয়েছে।
সেইসঙ্গে ঠিকঠাক খাবার জুটত না তার। দিনের পর দিন ভাল করে না খেতে পেয়ে তার শরীর ভেঙে গিয়েছে। তারমধ্যেই তাকে দিয়ে সারাক্ষণ রোজগার চালিয়ে যাচ্ছিল তার মনিব।
জঙ্গলে পর্যটকদের নিয়ে ঘোরা থেকে শুরু করে বিয়ে বাড়িতে হাতি ভাড়া দেওয়া, অথবা ধর্মীয় শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া এবং আরও যা যা ভাবে হাতিকে কাজে লাগিয়ে রোজগার করা যায় তা চালিয়ে যাচ্ছিল সে।
সবচেয়ে ভয়ংকর ছিল ইমা-কে দিয়ে দিনের পর দিন ভিক্ষা করানো। যা করাত তার মনিব। সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তার পায়ের তলায় ধারালো কাচে কাটা থেকে ধারাল ধাতুতে কাটার ক্ষত রয়েছে।
এককথায় ইমা-র ওপর অকথ্য অত্যাচার চলত। তাকে দিয়ে প্রতি মুহুর্তে রোজগার করিয়ে নেওয়া হত। সেইসঙ্গে খাবার যা দেওয়া হত তা তার শরীরের জন্য ভয়ংকর। তাকে প্রচুর মিষ্টি ও ভাজা খাবার খাওয়ানো হত। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন এটা হাতিটির শরীরের জন্য আরও খারাপ হয়েছে।
ইমা-কে উদ্ধার করার পর ঝাড়খণ্ড সরকার এবার তাকে সুস্থ করতে আগ্রা-মথুরা সীমান্তে এলিফ্যান্ট কনজারভেশন অ্যান্ড কেয়ার সেন্টার-এ পাঠাতে চলেছে। সেখানেই তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করবেন পশু চিকিৎসকেরা। তবে ইমা-র শারীরিক অবস্থা যথেষ্ট উদ্বেগের বলে মেনে নিচ্ছেন তাঁরা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা